ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কমছে বিদেশী

পুঁজিবাজারে বাড়ছে স্থানীয় বিনিয়োগকারী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১০, ২৯ মার্চ ২০২৩

পুঁজিবাজারে বাড়ছে স্থানীয় বিনিয়োগকারী

সার্বিকভাবে দেশের শেয়ারবাজারে মন্দা বিরাজ করলেও চলতি মাসে স্থানীয়

সার্বিকভাবে দেশের শেয়ারবাজারে মন্দা বিরাজ করলেও চলতি মাসে স্থানীয় বা দেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। মার্চের ২৬ দিনে পুঁজিবাজারে স্থানীয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে আড়াই হাজারের ওপরে। তবে স্থানীয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে। চলতি মাসে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা প্রায় একশ’ কমে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম) বেঁধে দেওয়ার কারণে শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এমন পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত নন। 
ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারের দাম এক জায়গায় আটকে থাকছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। এতে বাজারের ওপর থেকে বিদেশীদের আস্থা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে শেয়ারবাজারে বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব ছিল ৬৩ হাজার ১২৫টি। সেই সংখ্যা এখন (২৬ মার্চ) কমে ৬৩ হাজার ৪৪টিতে নেমেছে। অর্থাৎ মার্চ মাসে বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ৮১টি। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমলেও সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারে বিও হিসাব বেড়েছে। বর্তমানে বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৯৪টি, যা ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৫টিতে। 
অর্থাৎ মার্চ মাসের ২৬ দিনে বিও হিসাব বেড়েছে ২ হাজার ৫৮৯টি।
সিডিবিএলের তথ্যমতে, গত এক মাসে পুরুষ ও নারী উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কোম্পানি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। বর্তমানে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ৭৪টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ১৬টি। অর্থাৎ মার্চ মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব ২ হাজার ৫৮টি বেড়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িছেছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮১টিতে। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৩১৬টি। 
এ হিসাবে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ৪৬৫টি। বর্তমানে কোম্পানি বিও হিসাব রয়েছে ১৬ হাজার ৬৩৯টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৫৭৩টি। সে হিসাবে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ৬৬টি। 
বর্তমানে দেশী বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৮১১টি, যা ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ২০৭টি। অর্থাৎ দেশী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ২ হাজার ৬০৪টি।
পুঁজিবাজারে বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমার কারণ হিসেবে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমবে- এটা স্বাভাবিক। ফ্লোর প্রাইসের কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছে।
ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। বিদেশীরা এমন পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত নন। ফ্লোর প্রাইসের কারণে তারা এক্সিট নিতে পারছেন না। শেয়ার বিক্রি করতে না পারলে তারা কেন বিনিয়োগ করবে? এই অবস্থা চলতে থাকলে সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

×