ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চামড়াজাত পণ্যের প্রদর্শনীতে দশটি দেশের ২০০ প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য সরকারের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য সরকারের

রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী

রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী। একই ছাদের নিচে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য চামড়াজাতপণ্য, মেশিনারিজ, কম্পোনেন্ট, ক্যামিক্যাল এবং অ্যাকসেসরিজ পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। প্রদর্শনীতে অংশ নিতে এখাতের বিদেশি বিনিয়োকারীরা এখন ঢাকায় আসছেন। পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এ খাত বিতর্কের মুখে থাকলেও এবার প্রদর্শনীর মাধ্যমে ইতিবাচক ভাবধারায় ফিরে আসছে চামড়াশিল্প।

এবারের প্রদর্শনীতে ১০টি দেশের খাত সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মূলত এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে এ খাতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং দেশে উৎপাদিত চামড়াজাত পণ্য বিদেশীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চামড়া শিল্প এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  
বুধবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী লেদার টেক বাংলাদেশ-২০২২’র অষ্টম আসরের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ওই সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগ প্রয়োজন। দেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে।

এছাড়া এ শিল্পের জন্য আলাদা চামড়া শিল্প নগরী করা হয়েছে সাভারের হেমায়েতপুরে। সেখানে পরিবেশবান্ধক কারখানায় ফিনিশড লেদার করছেন উদ্যোক্তারা। কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে ভাল করছে বাংলাদেশ। এ কারণে এ শিল্পে এখন দেশী-বিদেশী আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আগামীতে চামড়া শিল্প আমাদের অর্থনীতিতে গার্মেন্টস শিল্পের চেয়ে ভালো অবদান রাখবে।

চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয় ২০৩০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার থেকে ১০-১২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরে চামড়া শিল্পে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।  এদিকে এবারের প্রদর্শনীতে ভারত থেকে কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টস (সিএলই) এবং ইন্ডিয়ান ফুটওয়্যার কম্পোনেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইফকোমা) প্যাভিলিয়ানসহ ১০টি দেশের প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠানের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং মেশিনারিজ, কম্পোনেন্ট, কেমিক্যাল এবং অ্যাকসেসরিজ প্রদর্শিত হচ্ছে।

প্রথমদিনেই জমে উঠেছে প্রদর্শনী। লেদারটেক বাংলাদেশ-২০২২ আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতা করছে  লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। এছাড়া অন্য পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেনারস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি।

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়া শিল্পে বিশ্বের যত আধুনিক প্রযুক্তি আছে তা বাংলাদেশে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে থেকে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা। এর ফলে যারা রপ্তানিকারক আছে তাদের সক্ষমতা বাড়বে আর নতুন যারা এ সেক্টরে আসতে চাচ্ছেন তারা এক ছাদের নিচে এ সেক্টরের সব তথ্য পাবেন। চামড়া শিল্পকে যদি আরও শক্তিশালী করতে হয় তাহলে সাপ্লাই চেইনদের দেশে আনতে হবে।

কাঁচামালগুলো হয় তারা স্টক করবে অথবা ভবিষ্যতে দেশে উৎপাদন করবে। তাহলে আমরা বিশ্বে ভালো অবস্থানে থাকতে পারব। তিনি বলেন, চায়না ও ভিয়েতনামে করোনার লকডাউনের কারণে তাদের মার্কেট বন্ধ। তাই বিশ্বের নামিদামি বায়ারদের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। যা আমাদের এ লেদার সেক্টরকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলবে। এখনই বাংলাদেশের সময় চামড়া শিল্পকে আরও উন্নত মানের করা।

পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানো। আমরা সস্তা প্রডাকশন চাই না, ভালো মানের পণ্য চাই। এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন্স প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক নন্দ গোপাল কে বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন ও পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রায় ৩ বছরের ব্যবধান সত্ত্বেও এবারের অয়োাজনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মেশিনারি সরবরাহকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। প্রদর্শনী চলবে শুক্রবার ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী।

×