ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে আমদানিকৃত বিদেশী ফল

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ২৪ মে ২০১৯

দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে আমদানিকৃত বিদেশী ফল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে আরেক দফা কমেছে পেঁয়াজের দাম। ৫ টাকা কমে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা। আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ পেতে ভোক্তাকে ২২-২৬ টাকা গুনতে হচ্ছে। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। চড়া ফলের বাজার। দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে আমদানিকৃত বিদেশী ফল। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, যাত্রাবাড়ি বাজার, ফকিরাপুল বাজার ও মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঈদ সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার আর কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী সপ্তাহ থেকে নাড়ির টানে রাজধানী ছাড়বে নগরবাসীর একটি বড় অংশ। এ কারণে ভোগ্যপণ্যের উপর চাপও কমে আসবে। নতুন করে আর কোন পণ্যের দাম না বাড়ায় বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে প্রচন্ড গরমে ইফতারিতে ফলের চাহিদা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা এই চাহিদাকে পুঁজি করে দ্বিগুন দামে বিক্রি করছে মাল্টা, আপেল, আঙ্গুর ও খেজুরসহ নানা রকমের ফল। এমনকি মৌসুমী লিচু, আম ও আনারস, বাঙ্গী, ও তরমুজের মতো ফলও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। মনিটরিং না থাকায় ফলের দাম নেয়া হচ্ছে ইচ্ছে মতো। জানা গেছে, রাজধানীর বাদামতলী ও সদরঘাটের ফলের আড়তগুলোতে এবার সবচেয়ে বেশি বিদেশী ফল আমদানি হয়েছে। চারদিকে তাকালেই চোখে পড়ে আপেল, মাল্টা, আঙ্গুর, বেদানাসহ নাম না জানা সব বিদেশী ফল। কিন্তু রমজানের চাহিদাকে পুঁজি করে ফলের বাজারে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্রের কারসাজি বেড়েছে। পাইকারিতে দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারেও ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে ফল কিনতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্টল হাউসবিল্ডিং ফাইন্যান্সের এক ফল ব্যবসায়ী জনকণ্ঠকে বলেন, ১২০ টাকার আপেল এখন ২৬০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া ১০০ টাকার মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে ফলের দাম বেশি হওয়ার কারণে খুচরা বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ফলের দাম বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ভোক্তারা বলছেন, রোজার শুরু থেকে এবার ফলের বাজার চড়া। বিশেষ করে আমদানিকৃত বিদেশী ফল যেনো ছুঁয়েও দেখা যায় না। প্রতিকেজি লাল আঙ্গুর রোজার আগে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন সমপরিমাণ কিনতে ভোক্তাতে খরচ করতে হচ্ছে সাড়ে ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত। বিদেশী ফলের দাম বেশি হওয়ার কারণে কমছে না মৌসুমী ফলের দামও। ভোক্তাদের মতে, নিত্যপণ্যের মতো নিয়মিত ফলের বাজারেও মনিটরিং হওয়া প্রয়োজন। বাদামতলী ও সদরঘাটের ফলের বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলে ভেজালমুক্ত ফল পাওয়ার পাশাপাশি ন্যায্যমূল্যও নিশ্চিত হবে। এদিকে, রাজধানীর বাজারগুলোতে অপরিবর্তিত দামে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২৫-৫৫০ টাকা। এছাড়া খাসির মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত দাম দু’একটি বাজারে কার্যকর হলেও বেশির ভাগ ব্যবসায়ীরা মূল্য বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও বাজারে মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে বলে জানা গেছে। অপরিবতির্ত রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রুই কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য সবজি ৪০-৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। মুদিপণ্যের মধ্যে প্রতিকেজি চিনি ৫২-৫৫, মশুর ডাল ৫৫-১২০, সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ৭৮-৮৪, প্রতিকেজি ছোলা ৭৫-৮৫, সরু চাল ৪৮-৫৬, মোটা চাল ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারসহ অলি গলির দোকানগুলোতে এখনও বিক্রি হচ্ছে মানহীন ৫২টি পণ্য। এসব পণ্য দোকানের সামনে রেখে বিক্রি না করলেও দোকানের পেছনে রেখে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু পণ্য বাজার থেকে সরালেও এখনও শেষ করতে পারেনি। গত ১২ মে নিন্মমানের এসব পণ্য বাজার থেকে জব্দ করে ধ্বংস করতে নিরাপদ খাদ্য অধিদফতর ও ভোক্তা অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
×