ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

লক্ষ্য পূরণ হয় না কখনও

জিডিপির পরিকল্পনা ও বাস্তবতায় ফারাক বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

জিডিপির পরিকল্পনা ও বাস্তবতায় ফারাক বাড়ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। পরিকল্পনার সঙ্গে ফারাক বাড়ছে বাস্তবতার। তারপরও যে কোন পরিকল্পনা করা হলেই উচ্চাভিলাসী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে। এতে বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকছে না। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত যে কয়েকটি আর্থিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, পরিকল্পনার শতভাগ কখনই পূরণ হবে না। এটিই স্বাভাবিক। বরং শতভাগ পূরণ হলেই সেটি হবে অস্বাভাবিক। কেননা পরিকল্পনা তৈরি করা হয় তাত্ত্বিক ভিত্তিতে। আর সেটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নাও মিলে যেতে পারে। যেসব পরিকল্পনা করা হলো দেখা গেল পরের বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারের অবস্থা খারাপ হলো কিংবা দেশেই বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিল, এর ফলে ফসলের ব্যাপক ফসল ও সম্পদহানি ঘটল তাহলে পরিকল্পনার লক্ষ্য ঠিক থাকবে কেমন করে। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৭৩ থেকে ৭৮ সাল পর্যন্ত প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ আর এ সময়ে অর্জিত হয়েছিল চার শতাংশ, যা লক্ষ্যের ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ১৯৭৮ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ আর এ সময়ে অর্জিত হয়েছিল তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১৯৮০ থেকে ৮৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল পাঁচ দশমিক চার শতাংশ আর অর্জিত হয়েছিল তিন দশমিক আট শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ১৯৮৫ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যা ছিল তাই, এক্ষেত্রে অর্জিতও হয়েছে একই পরিমাণ। ১৯৯০-৯৫ সাল পর্যন্ত চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল পাঁচ শতাংশ আর অর্জিত হয়েছিল চার দশমিক দুই শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৪ শতাংশ। ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল সাত শতাংশ আর অর্জিত হয়েছিল পাঁচ দশমিক এক শতাংশ, এক্ষেত্রে অর্জিৃত হয়েছিল লক্ষ্যের ৭২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০০৩ থেকে ০৫ সাল পর্যন্ত ইন্টারিম প্রোভার্টি রিডাকশন স্ট্রাটেজি পেপার (আইপিআর এসপি) তে কোন লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল না। কিন্তু এ সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ছয় দশমিক ২১ শতাংশ। ২০০৫ সাল থেকে ০৮ সাল পর্যন্ত কোন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ছিল না। এ সময়ে বাস্তবায়িত হয় ন্যাশনাল স্ট্রেটেজি ফর এক্সিলারেট প্রোভার্টি রিডাকশন (এনএসএপিআর-এক)। এটির মধ্যেও কোন লক্ষ্যমাত্রা না থাকলেও বাস্তবায়ন শেষে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ছয় দশমিক ৪১ শতাংশ। ২০০৯ সাল থেকে ১১ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছিল ন্যাশনাল স্ট্রেটেজি ফর এক্সিলারেট প্রোভার্টি রিডাকশন (এনএসএপিআর-দুই)। এতেও কোন লক্ষ্যমাত্রা ছিল না। কিন্তু বাস্তবায়ন শেষে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছিল ছয় দশমিক ৩৩ শতাংশ। বর্তমানে চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-১৫) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে সাত দশমিক তিন শতাংশ। পরিকল্পনার ৫ বছর শেষে অর্জিত হতে পারে ছয় দশমিক ৩২ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্যবর্তী মূল্যায়ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল সাত দশমিক দুই শতাংশ, এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ছয় দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। ২০১২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাত শতাংশ, অর্জিত হয়েছিল ছয় দশমিক দুই শতাংশ। পরিকল্পনার শুরুর সময় ২০১১ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় দশমিক সাত শতাংশ আর অর্জিতও হয়েছে ছয় দশমিক সাত শতাংশ। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সরকারের এখনই করণীয় হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যেমন, পদ্মা সেতু, ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে, ডাবল ট্রাক অব ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে, মেট্রোরেল, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড ইত্যাদি প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।
×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার