ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিসিসিআইয়ের আলোচনায় সালমান এফ রহমান

শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়াবে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৬, ১২ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ১১:৪৩, ১২ অক্টোবর ২০২২

শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়াবে সরকার

শিল্প খাতের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে

শিল্প খাতের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। একইসময়ে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ হিসেবে বন্ডকে বেছে নেয়ার পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার এফবিসিসিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে ‘বন্ড মার্কেট : দ্য আল্টিমেট লং টার্ম সল্যুশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, আগে ২৬-৩০ টাকায় গ্যাস কিনে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ক্যাপটিক পাওয়ারে জন্য ১৬ টাকায় বিক্রি করেছে। এখন গ্যাস কেনা পড়ছে ৭৫ টাকা। এমন সময় ১৬ টাকায় গ্যাস বিক্রি করা সম্ভব নয়। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসতে এই গ্যাসের দাম কত টাকা করা যায় তা নির্ধারণ করার জন্য। আমি ইতোমধ্যে বিকেএমইএ, বিজিএমইএ এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। এখন ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেবেন গ্যাসের দাম কত টাকা করা যায়।

তিনি বলেন, সরকার কত টাকায় সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিতে পারবে আর ব্যবসায়ীরা কত টাকায় কিনতে পারবেন এ রকম একটা পর্যায়ে এনে আমরা মূল্য নির্ধারণ করতে পারলে গ্যাস সরবরাহ করতে পারব। কারণ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা এলএনজি কিনতে পারছি কিন্তু দাম বেশি পড়ছে। প্রাইসের কারণে সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুত গ্যাসের সঙ্কট এটা দেশের বড় সমস্যা। ইতোমধ্যে লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। তবে এসব সমস্যা শুধু আমাদের একার নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। এত বড় দেশ তারাও চাপে আছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের কিছু সমস্যা আছে যেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আরও কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, যেমন- আমাদের বন্দরে সমস্যা আছে, ট্যাক্স ভ্যাটের সমস্যা আছে, অবকাঠামোগত সমস্যা, রেগুলেটরি সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে; এগুলো আমরা ইচ্ছা করলেই সমাধান করতে পারি। এ বিষয়ে আমাদের নজর দেয়া দরকার। বন্ড মার্কেট সম্পর্কে সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের বন্ড মার্কেট বিষয়ে একদিকে প্রচারের অভাব রয়েছে অন্যদিকে এ মার্কেটটার বিষয়ে অনেক বিজ্ঞ লোকও বুঝেন না।

এই দুইটা বিষয়ে এখন জোর দিতে হবে। মানুষকে বুঝাতে হবে শেয়ারে বিনিয়োগের চেয়ে বন্ডে বিনিয়োগ বেশি ঝুঁকিমুক্ত। এসব বন্ডে বিনিয়োগ করলে আসল টাকা খোয়া যাওয়ার কোনো ভয় নেই। সরকারী বন্ড লেনদেন চালু হয়েছে এটা আমাদের জন্য একটি নতুন মাইলফলক।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বন্ডের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বাড়ছে, পাশাপাশি বাড়ছে মানুষের আগ্রহ। আমাদের কাছে বন্ড নিয়ে অনেক অনুরোধ আসছে। আমরা দুই বছর ধরে চেষ্টা করছিলাম বন্ড পপুলার করার। প্রাইভেট সেক্টরে প্রথম সুকুক বন্ড এসেছে, দ্বিতীয় সুকুক বন্ড নিয়ে আসছে প্রাণ।

প্রাণ গ্রুপ আরও কয়েকটা বন্ড নিয়েছে, আর সেগুলো পুরোপুরি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দ্বারা সাবস্ক্রাইবকৃত। তিনি আরও বলেন, একটি আয়ের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো করোনার পরে মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। কিন্ত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত সিদ্ধান্তে করোনাকালে গার্মেন্টস খোলা রাখায় বাংলাদেশ সঙ্কটে পড়েনি। তাই পরিস্থিতি বুঝে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির সাবেক কমিশনার এবং শান্তা এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান, সিএফএ, এফসিএমএ। সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভ্র কান্তি চৌধুরী, রিচার্ড ডি রোজারিও, নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও ঢাকা স্টক একচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী।

×