ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০ চৈত্র ১৪২৯

monarchmart
monarchmart

বিজনেস লিডার সেশনে বক্তাদের অভিমত

রপ্তানির নেতৃত্ব দেবে প্রযুক্তিসহ ১২ খাত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৪৯, ১২ মার্চ ২০২৩

রপ্তানির নেতৃত্ব দেবে প্রযুক্তিসহ ১২ খাত

উন্নত দেশ তথা ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ

উন্নত দেশ তথা ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ। আর পোশাকের পর পরবর্তী বড় রপ্তানি খাত হতে যাচ্ছে প্রযুক্তি পণ্য। আর তার সঙ্গে সামনের কাতারে থাকবে বিলিয়ন ডলার আয় করা ১২টি খাত। 
শনিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে এসব বিষয় উঠে আসে। বিজনেস লিডার শীর্ষক একটি সেশনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের বিজনেস সম্পাদক রিচার্ড কোয়েস্ট এই সেশনটি পরিচালনা করেন। এতে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর জিয়াংচেন জ্যাং এবং চীনের ডেপুটি বাণিজ্যমন্ত্রী কিয়ান কেমিং।
সেমিনারের শুরুতে সিএনএনের উপস্থাপক বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চান। এ বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, রপ্তানি পণ্যে বহুমুখিকরণই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই সমস্যায় আছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে সমাধান জানতে চান এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে। জবাবে স্বাধীনতার পর এ দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য ছিল পাট। সেখান থেকে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানি খাত পোশাক।

প্রযুক্তি পরবর্তীতে প্রধান রপ্তানি খাতে পরিণত হবে। আর সামনে সম্ভাবনাময় ১২টি খাত রপ্তানিতে এগিয়ে আসবে। এসব খাত এখনই বিলিয়ন ডলার আয় করছে। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে- টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাবার, চামড়া, সিরামিক, পাট, ওষুধ, প্লাস্টিক, সিরামিক, হালকা প্রকৌশল এবং হস্তশিল্পসহ বেশ কয়েকটি খাত। প্রযুক্তি খাতের বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ফ্রিল্যান্সার আছে এ দেশে। যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ছয় লাখ।

আর সালমান এফ রহমান এ বিষয়ে যুক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ উচ্চ ক্ষমতার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করছে। আর এ দেশে বিশাল শ্রমশক্তি রয়েছে। তারাই আগামীতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় করবে। যা এখন এক বিলিয়ন ডলারের বেশি।
পরে রিচার্ড বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে কী ধরনের সংস্কার লাগবে- এমন প্রশ্ন করেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টরকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কতটা সুন্দরভাবে উত্তরণ ঘটবে তা এ দেশের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে। সত্যিকার ব্যবসা পরিবেশ এবং নীতি সহায়তা দরকার হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা বা সমঝোতার প্রয়োজনের বিষয়টিকে তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন। 
রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের যোগাযোগ ও অবকাঠামো তৈরি করছি। ২০২৬ সালে গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হবে। যদিও গভীর সমুদ্র বন্দর ছাড়াই বাংলাদেশ দারুণভাবে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করেছে। তবে এটা চালু হলে বাণিজ্যে দারুণ গতি আসবে। সৌদি আবর-সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ এমন বন্দরের বিষয়ে আগ্রহী বলে জানান তিনি।

সঙ্গে সঙ্গেই চীনের কাছে শ্রীলঙ্কার বন্দর ইজারা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে কীভাবে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি এড়াবে বাংলাদেশ তা জানতে চান বিখ্যাত এ বিজনেস সম্পাদক। জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, আমরাতো তাদেরকে আমাদের বন্দরের মালিকানা দেব না। শুধুমাত্র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। 
রপ্তানি বাড়াতে সরকারের কাছে কেমন সহায়তা চান এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে তা জানতে চান রিচার্ড। জবাবে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নীতি সহায়তার পাশাপাশি আমরা অবকাঠামো এবং লজিস্টিক সহায়তা চাই। দক্ষ মানব সম্পদের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। শেষ মন্তব্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার জিয়াংচেন জ্যাং বলেন, চীন থেকে ৬৫  শতাংশ ব্যবসা এখন বিশ্বে বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম থেকেও ব্যবসা অন্যত্র যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের সামনে সুযোগ। তবে অবকাঠামোর চেয়ে মানসিকতা পরিবর্তনের দিকে মনযোগ দিতে বলেন তিনি।

বাণিজ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে বলেন। তবে বাণিজ্য বাড়াতে কর্মঠ শ্রমিক পেতে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন করেন কোয়েস্ট। তবে এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি কেউ। ডিজিটাল দেশ গড়ার বিষয়ে কথা বলার সময় সালমান এফ রহমানকে থামিয়ে দিয়ে রিচার্ড জানতে চান- ঢাকায় দুই কিলোমিটার যেতে দুই ঘণ্টা লাগে, তাহলে কীভাবে দেশ স্মার্ট হবে? জবাবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি।

আর মেট্রোরেল চালু হয়ে গেলে দুই মিনিটে ২০০ কিলোমিটার যাওয়া যাবে। এমন তাৎক্ষণিক জবাবে হলরুমে জোরে তালি পড়তে থাকে। এভাবেই প্রশ্ন আর পাল্টা প্রশ্নে জমে ওঠেছিল প্রথম বাংলাদেশ বিজনেস সামিট। যেখানে অনেক বিদেশী অতিথির উপস্থিতি নজর কেড়েছে সবার।

monarchmart
monarchmart