দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বাড়ছে চীনা মুদ্রা
মার্কিন ডলার নিয়ে এক ধরনের লেজেগোবরে অবস্থার মধ্যে এবার আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এখন থেকে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে এলসি খোলা ও লেনদেন করতে পারবে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ চীনা মুদ্রায় আন্তঃসীমান্ত লেনদেন নিষ্পত্তি করতে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এখন নিয়মিত ইউয়ানে লেনদেন করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর জন্য ইউয়ানে ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট নিষ্পত্তির সুযোগ বাড়ানো হলো।
এর আগে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলো চীনা মুদ্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং এ্যাকাউন্ট হিসাব রাখতে পারত। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময়ে ইউয়ানে ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট সেটেলমেন্টের সুযোগ খুলেছে যখন সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের রিজার্ভে ইউয়ান মুদ্রা বাড়াচ্ছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মধ্যে উভয় মুদ্রা বিনিময় সংক্রান্ত চুক্তি প্রস্তাব করেছে চীন।
গত আগস্টে এক চিঠিতে ঢাকায় চীনের দূতাবাস জানায়, মুদ্রা বিনিময়ের এই চুক্তি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে কমাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন খরচও।
যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীন। দেশটি ব্যাপক প্রভাবশালী হয়ে উঠছে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও আর্থিক বাজারে। জানা গেছে, গত দশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ৩০ শতাংশের বেশি অবদান চীনের। চীনের অর্থনৈতিক সক্ষমতা যখন বাড়বে- তখন দেশটি চাইছে, আন্তর্জাতিক লেনদেনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে মার্কিন ডলারের স্থান দখল করুক তাদের মুদ্রা।
আর এতে সায় দিয়ে, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও তাদের বৈদেশিক মুদ্রা মজুদে (ফরেক্স রিজার্ভে) ইউয়ানের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক লেনদেনে ডলারের বিকল্প হিসেবে বিশ্বজুড়ে দ্রুত স্বীকৃতি পাচ্ছে ইউয়ান। আর তাই বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ডলারের অংশ কমিয়ে ইউয়ানের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইউয়ানের পরিমাণ ২০১৭ সালের ১ শতাংশের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৩২ শতাংশে। অন্যদিকে, একই সময়ে রিজার্ভে আধিপত্য করা মার্কিন ডলারের পরিমাণ ৮১ শতাংশ থেকে কমে ৭৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। রিজার্ভে ডলারের অংশ কমলেও, বেড়েছে অন্যান্য মুদ্রার পরিমাণ। উদাহরণস্বরূপ, রিজার্ভে ইউরোর কথা বলা যেতে পারে। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিজার্ভ মুদ্রা।
এই মুদ্রার মজুদ ২০১৭ সালের ৩.৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি বছরের আগস্টে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ব্রিটিশ পাউন্ডের অংশ ৩.৪৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪.৪ শতাংশ। এমন চিত্রই উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে। ২০১৬ সালে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) এর স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) মুদ্রা ঝুড়িতে ইউয়ান অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে ইউয়ানের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে।
এর কিছুকাল পর- রিজার্ভ ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও ইউয়ানকে অনুমোদিত মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে- ফরেক্স রিজার্ভে চীনা মুদ্রাটির পরিমাণ বাড়াতে শুরু করেছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রকাশিত ইউবিএস এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বার্ষিক রিজার্ভ ম্যানেজার সমীক্ষা অনুসারে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮৫ ভাগই বলেছে, তারা ইউয়ানে বিনিয়োগ করেছে, কিংবা এই মুদ্রায় বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করছে। এক বছর আগেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সংখ্যা ছিল ৮১ ভাগ।
ইউবিএস এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (আমেরিকা) ইনকর্পোরেশন হলো- সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিষেবা দেয় এমন একটি সংস্থা। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকারী, আর্থিক উপদেষ্টা এবং প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ ও পরামর্শমূলক পরিষেবা দিয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ফরেক্স (বৈদেশিক মুদ্রা) ব্যবস্থাপকরা ১০ বছরের মধ্যে তাদের রিজার্ভে ইউয়ানের অংশ গড়ে ৫.৮ শতাংশে ধরে রাখতে চাইছেন, যা গত বছরের ৫.৭ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি।
অথচ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রতিবেদনে ২.৯ শতাংশের কথা বলা হয়েছিল। নিঃসন্দেহে এটি আইএমএফের অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ডলার রিজার্ভ রয়েছে গড় ৬৩ শতাংশ, যা আগের বছরের ৬৯ শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম। তবে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইউবিএস বলেছে, চলতি বছর জরিপে লাতিন আমেরিকান ব্যাংকের সংখ্যা ছিল কম। এসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাধারণত বেশি পরিমাণে ডলার রিজার্ভে রাখে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত আগস্ট পর্যন্ত ৫২৮ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান রিজার্ভে রাখা হয়। অথচ ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ৩২৩ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান ছিল রিজার্ভে। চীন ইতোমধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে মূল্য নির্ধারণ এবং লেনদেন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উভয় দেশের স্থানীয় মুদ্রা, রেনমিনবি (ইউয়ানের স্থানীয় নাম) এবং টাকা বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মধ্যে উভয় মুদ্রা বিনিময় সংক্রান্ত চুক্তি প্রস্তাব করেছে চীন।
চলতি বছরের ১৯ আগস্ট পাঠানো এক চিঠিতে ঢাকার চীনের দূতাবাস জানায়, মুদ্রা বিনিময়ের এই চুক্তি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। সেইসঙ্গে কমাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন খরচও। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চীনা মুদ্রা তো আমাদের উদ্বৃত্ত নেই। তাই ব্যক্তি পর্যায়ে সুফল পাওয়া গেলেও সামষ্টিক পর্যায়ে দৃশ্যমান কোন সুফল পাওয়া যাবে না। তার মানে এই নয় যে কেউই এর সুবিধা পাবে না। কাজেই চীনা মুদ্রায় লেনদেন করেত হলে রফতানি করে আমরা যেটা পাচ্ছি, তার চেয়ে বেশি পরিমাণে কিনছি।
যেহেতু এটা রিজার্ভ কারেন্সির মধ্যে আছে, তাই যদি উদ্বৃত্ত থাকে তা হলে ইউরোপ-ইন্ডিয়াসহ অন্য বাজারে এটা ব্যবহার করা যেত। উদ্বৃত্ত চায়না থেকে আমরা শুধু যে বাণিজ্যের মাধ্যমে বা রফতানির মাধ্যমে পাই সেটার সঙ্গে আমরা যদি আর্থিক সহায়তা যোগ করি সেক্ষেত্রেও তো চায়না থেকে জিনিস কিনতে বাধ্য। এমন না যে তারা আমাদের ক্যাশ ফ্রি দিচ্ছে। সুতরাং যে কোন জায়গায় ব্যবহার করতে পারি। তাত্ত্বিকভাবে একটা সুবিধা বাড়াল, কিন্তু সামষ্টিক দিক থেকে এটা কোন প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। যেহেতু আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বিরাট। সেক্ষেত্রে আমাদের নতুন কোন সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।
আর সামষ্টিক পর্যায়ে সুফল পাওয়া না গেলে ডলারের অস্থিরতাও কমানো যাবে না।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিআই) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আল মামুন মৃধা জানান, উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা ইউয়ানে লেনদেন করতে চান। কারণ অন্য মুদ্রায় লেনদেনে বিনিময় ঝুঁকি রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তে ইউয়ানে এবার লেনদেন বাড়বে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক লেনদেনে ইউয়ান এখন পঞ্চম মুদ্রা। চীন ইতোমধ্যে ৯ দেশের সঙ্গে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতি চালু করেছে।
এসব দেশ ডলারের মতো ইউয়ানে যে কোন লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারে। এর বাইরে ৩৯ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ইউয়ানে লেনদেন নিষ্পত্তির একটি বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য একক মুদ্রার ওপর নির্ভরতা কমানোর যাত্রার সূচনা। এখন থেকে ব্যাংকগুলো ভবিষ্যতে অর্থ প্রদান নিষ্পত্তির জন্য চীনা মুদ্রা রাখা শুরু করবে।
বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) জানায়, চীন বিশ্ববাজার থেকে বছরে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার পণ্য আমদানি করে। বাংলাদেশ যদি এর ১ শতাংশ রফতানি করতে পারে তা হলে এই আয় দাঁড়াবে দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলার। চীনে সর্বোচ্চ রফতানি হয়েছিল ৯৫ কোটি ডলার। এটা ২০২১ অর্থবছরে নেমে আসে ৬৮ কোটি ডলারে।
এই আয় চীনের মোট আমদানির ০.০৪ শতাংশ মাত্র। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে চীনে রফতানি করা হয়েছে ৬৮ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য। একই সময় চীন থেকে আমদানি হয়েছে প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সব পণ্য বিনা শুল্কে প্রবেশের সুযোগ পাওয়ায় চীনের বাজারে রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো বাংলাদেশের বড় রফতানি বাজার হতে পারে চীন বলে মনে করছেন সরকারের নীতি নির্ধারক, রফতানিকারক ও অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। এ জন্য সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে সমন্বিতভাবে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীন তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসা থেকে সরে এসে অন্যান্য খাতের দিকে নজর দিয়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সব আইটেম বিনা শুল্কে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে। গত ৭ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশ থেকে আরও ১ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে যা কার্যকর হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির দেয়া আগের শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় তৈরি পোশাক খাতের নিট ও ওভেনের প্রায় সব আইটেম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখন বাংলাদেশের প্রধান এ রফতানি পণ্যের কিছু আইটেমে চীন পুরো শুল্ক তুলে দেয়নি।
নতুন ১ শতাংশের আওতায় এবার তৈরি পোশাকের সব আইটেম বিনা শুল্কের সুবিধা পাবে। বাংলাদেশের নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ভারতের বাজারে আমাদের রফতানি যেভাবে বাড়ছে, চীনের বাজারেও আমরা যদি সেভাবে প্রবেশ করতে পারি, তা হলে আমাদের আর পেছনের দিকে তাকাতে হবে না। ইউরোপ-আমেরিকার ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।
বাংলাদেশের জন্য বড় তহবিল পাওয়ার অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে চীন। এর মাধ্যমে দেশটি আলোচিত সময়ে বাংলাদেশের শীর্ষ উন্নয়ন সহযোগীর তালিকায় জায়গা করে নেয়। স্বাধীনতার পর চীন থেকে বাংলাদেশে সাহায্যের পরিমাণ ছিল একেবারে শূন্যের কোঠায়। সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে চীন থেকে আসা বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ বেড়ে প্রায় ১১.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ষষ্ঠ বৃহৎ দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদার হয়ে ওঠে চীন, তহবিল জোগানের এই প্রবৃদ্ধিকে সুবিশালই বলা যায়। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইউয়ানে চীনের ইউয়ানে সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি চারগুণ বাড়েÑ মূলত তিনটি প্রকল্পে সহায়তার মাধ্যমে- কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন পরিকল্পনা এবং ছয়টি জাহাজ সংগ্রহের ক্ষেত্রে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীন ইউয়ান ছাড়া ডলারে বা অন্য কোন মুদ্রায় সহায়তা দেয়নি।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোতে চীনা সংস্থাগুলোর সরাসরি বিনিয়োগ গত বছর ১৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণে দাঁড়িয়েছে, যার এক-চতুর্থাংশই হয়েছে ইউয়ানে। চীন এখন নিজের বৈদেশিক বাণিজ্যের ১৫ শতাংশই নিষ্পত্তি করে নিজস্ব মুদ্রায়। ২০১৫ সালেও এই হার ছিল ১১ শতাংশ।
বিটকয়েনের লেনদেন নিষিদ্ধ
ক্রিপ্টোকারেন্সি (ডিজিটাল মুদ্রা) ও বিটকয়েনে যেকোন লেনদেনে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে। সার্কুলারটি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়োজিত সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এমএফএস প্রতিষ্ঠানসহ বৈদেশিক মুদ্রা সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের মাধ্যমে যেন এ ধরনের লেনদেন করা না যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন এ্যাক্ট ১৯৪৭ অনুযায়ী ভার্চুয়াল কোন মুদ্রার স্বীকৃতি নেই জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, যেকোন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন বা আইনগত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল মুদ্রা ব্যবহারের অনুমোদন নেই।
ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ভার্চুয়াল সম্পদের বিপরীতে কোন আর্থিক দাবির সুযোগ নেই। কোন আইন এ ধরনের সম্পদের গ্যারান্টি দেয় না বলে লেনদেন থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।