শিল্পকলায় ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা
দেশবরেণ্য প্রয়াত চার চারুশিল্পী স্মরণে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। এরা হলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান, শিল্পী এস এম সুলতান ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। আয়োজনের প্রথম দিন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও পটুয়া কামরুল হাসান স্মরণে আলোচনা হয় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে।
একাডেমির চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় আয়োজনের প্রথম দিন প্রথম পর্বে স্মরণ করা হয় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী মোস্তফা জামান। এ পর্বের মুখ্য আলোচক ছিলেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। এ ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন স্থপতি মইনুল আবেদিন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসনা জাহান খানম।
এদিন দ্বিতীয় পর্বে পটুয়া কামরুল হাসান স্মরণে আলোচনা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। মুখ্য আলোচক ছিলেন শিল্পী হাশেম খান। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সুমনা হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
মূল প্রবন্ধে মফিদুল হক বলেন, কামরুল হাসানের জীবনসত্তা ও শিল্পীসত্তা মিশে আছে ওতপ্রোতভাবে। তার শিল্পীসত্তার মতোই রঙে রেখায়, বর্ণে-বিভায় এমন ঔজ্জ্বল্য ও নাটকীয়তায় সমৃদ্ধ তার জীবন যে এই শিল্পীর প্রতিকৃতি আঁকা সহজ নয়। তার ব্যক্তিসত্তা উপমহাদেশের অনেক বড় পরিবর্তনময়তার মধ্যদিয়ে বিকশিত হয়েছে। নানা ভাঙচুরের মধ্যদিয়ে তিনি চলেছেন। সেইসঙ্গে তার শিল্পবোধ ও সৃজন প্রয়াসও ক্রমে প্রসারতা ও গভীরতা অর্জন করেছে। ঝর্ণার উচ্ছলতার মতোই তার কাজ উৎসারিত হয়েছে তীব্র প্রবহমানতা নিয়ে। চিত্রকলার প্রচলিত ধারা কিংবা ছবি প্রদর্শনীর সামাজিকভাবে স্কীকৃত রীতি কোনো কিছুতে তিনি নিজেকে আটকে রাখেননি।
তিনি ক্যানভাসের ফ্রেমে বন্দি থাকার পাত্র ছিলেন না। সেইসঙ্গে আমরা লক্ষ্য করি তার জীবন ও শিল্পের যুগলবন্দি। তার মতো আর কোনো শিল্পীকে খুঁজে পাই না যার সঙ্গে তুলনা হতে পারেন কামরুল হাসান। আর সব শিল্পীর মতো তিনিও শিল্পের পূজারী। তবে কলাদেবীর আরাধনার বিবিধ উপাচার তার মতো করে সাজাতে পেরেছেন কম শিল্পীই। তিনি বলেন, ধর্মের অপব্যাখ্যা দ্বারা সমাজের ও শিল্পের পথযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে পুরনো শত্রুদের থাবা প্রসারিত হচ্ছে। আজ বুধবার একই স্থানে বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন।