ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট ‘এগ্রিভিলেজ’

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

প্রকাশিত: ০০:২৬, ১৯ মার্চ ২০২৩

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট ‘এগ্রিভিলেজ’

.

নানা আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্দশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রজেক্ট শোকেসের আয়োজন করে বিভাগটি? এতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব চিন্তাভাবনায় তৈরিকৃত প্রজেক্টগুলো মধ্যে সেরা নির্বাচিত করে চ্যাম্পিয়ন করা হয়েছেটিমথম্যাট্রিক্স এরএগ্রিভিলেজ নামক প্রজেক্টটি।

এগ্রিভিলেজ হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর এমন একটি পর্যটন ব্যবস্থা যেখানে একজন কৃষকের ফসলের মাঠ তার ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাই পর্যটন স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে এবং কৃষকরা সেখান থেকে উপার্জন করতে পারবে। প্রান্তিক কৃষকদের জন্য প্রযুক্তিভিত্তিক সমাধানে এটি স্মার্ট ইরিগেশন, প্লান্ট ডিজিজ ডিটেকশনসহ নানা রকম কাজ করবে।

সফটওয়্যারটির প্রস্তুতকারক মো. হেলাল উদ্দীন, তামিম মাহমুদ হাওলাদার, রেজাউল করিম হিরা, সৈয়দ মাহিদুল ইসলাম রাফেল জানান, দিনে দিনে কৃষকেরা কৃষি কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এর মূল কারণ ফসল উৎপাদনে খরচ বৃদ্ধিসহ উৎপাদিত ফসলের দাম কম এবং কৃষকদের সেকেন্ডারি কোনো আয়ের উৎস নেই। এই সমস্যার প্রযুক্তিগত সমাধানের খুঁজে অরগানাইজড কৃষির মাধ্যমে কৃষি জমিকেই কৃষিপর্যটন ক্ষেত্রে রূপান্তরের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এগ্রিভিলেজের। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ সহজেই কৃষকের সুসংগঠিত এবং সুসজ্জিত কৃষি জমি পরিদর্শনের সুব্যবস্থার পাশাপাশি কৃষকের কৃষি কাজে অংশগ্রহণেরও সুযোগ পাবে। দর্শনার্থীর নামমাত্র পরিদর্শন ফিস থেকেই কৃষক উল্লেখযোগ্য বাড়তি অর্থ উপার্জন করতে পারবে এবং গ্রাহকরা সুযোগ পাবে সরাসরি কৃষকের মাঠ থেকেই বাজার মূল্যেরও কমে ফসল, সবজি, ফলমূল ক্রয়ের। এর ফলে কৃষক যেমন উৎপাদিত কৃষি পণ্যের পাইকারি দামের থেকে ৬০-৭০ শতাংশ বেশি দাম পাবে তেমনি গ্রাহক খুচরা দামের থেকে ৩০-৪০ শতাংশ কম দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবে এবং পরবর্তীতে এপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করলে কৃষকের পণ্য সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেবে এগ্রিভিলেজ। এগ্রিভিলেজ সকল কৃষি খামার, মৎস্য খামার এবং মৌসুমি ফুল ফলের খামারের সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশে কৃষি-পর্যটনে বিপ্লব ঘটাতে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এগ্রিভিলেজ সাভারের বেশ কয়েকটি কৃষি এবং ফুলের খামারে অরগানাইজড ফার্মিং নিয়ে কাজ করছে। এবং কৃষকেরা সানন্দে এগ্রিভিলেজের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ব্যাপারে এগ্রিভিলেজের মেন্টর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক . সজীব সাহা বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। এই দেশে কৃষকরা সারা বছরেই বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ফসলের যথাযথ মূল্য তারা পায় না। অধিকন্তু বন্যা, খরাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের যে আর্থিক ক্ষতি হয় সেটা তারা সরবরাহ ফসল বিক্রি করেও কাটিয়ে উঠতে পারে না।

সেখান থেকেই আমরা চিন্তাভাবনা শুরু করি কিভাবে আমাদের কৃষকদের তাদের কৃষিকাজ থেকে একটি বিকল্প আয়ের উৎস সৃষ্টি করে দেয়া যায়। এগ্রিভিলেজ আমাদের সেই চিন্তা ভাবনারই একটা ফলাফল। তিনি আরও জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ব্যবস্থাটি একটি বহুল প্রচলিত পর্যটন ব্যবস্থা হলেও আমাদের দেশে এটি এখনো প্রচলিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি, এগ্রিভিলেজ প্লাটফর্মটি আমাদের কৃষকদের পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক পর্যটনেও উৎসাহিত করবে এবং বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের বিকাশে একটি ভিন্নমাত্রা যোগ করবে।

×