ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

স্থপতি কবি রবিউল হুসাইনের জন্মদিন উপলক্ষে সেমিনার

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:০১, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

স্থপতি কবি রবিউল হুসাইনের জন্মদিন উপলক্ষে সেমিনার

কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে এক সেমিনার, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সংগীতানুষ্ঠান হয় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে। জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

‘রবিউল হুসাইনের কবিতায় জীবন-মৃত্যু ও নিঃসঙ্গতা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক খোরশেদ বাহার। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক নান্টু রায় ও চিত্রা প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আকতার। শুরুতে চিত্রা প্রকাশনী প্রকাশিত রবিউল হুসাইনের ‘শূন্যগর্ভ কথামালা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইন আপন অবয়বে আমাদের মাঝে তার অনুপস্থিতি তিন বছরেরও অধিককাল পেরুতে চলেছে। ব্যক্তি জীবনে সদালাপী, আড্ডাবাজ অথচ পাঠমগ্ন এই কবিকে কখনো শূন্যানন্দের যাত্রী মনে হয়নি, বরং যতক্ষণ যেখানে থাকতেন মাতিয়ে রাখতেন চারপাশ সারাক্ষণ। চর্চা করতেন প্রায়শই শব্দের কিংবা বাক্যের বহুবিধ ব্যবহারের। তার অধিকাংশই হতো হাস্যকৌতুক রসসিক্ত। নিতান্তই বহু অন্তঃপ্রাণ ছিলেন কবি রবিউল হুসাইন।

জীবন আর মৃত্যুর দোলাচলে মানুষের কেটে যাওয়া সময়কে খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। তার একান্ত ভাবনায় সবিশেষ এটাই লক্ষ্যণীয় যে মানুষের মৃত্যু ক্ষণে ক্ষণে প্রতিদিন প্রতিরাতে। জীবনের সঙ্গে সারাক্ষণ তাই মৃত্যুরই বসবাস। জীবনের মুখোমুখি মৃত্যুকে দাঁড় করিয়ে কবি রবিউল হুসাইন স্থপতির চোখ দিয়ে তাদের গভীরে পর্যবেক্ষণ করেছেন। রবিউল হুসাইন প্রথমত কবি এবং শেষ পর্যন্ত কবিতাতেই আচ্ছাদিত থেকেছেন সারাক্ষণ মানুষের প্রাত্যহিকতার ভাবনায়। জীবনের ঘরে দুঃখের বসতকে নিয়ে অনাবিল আনন্দে কেটেছে তার সময়।

নিঃসঙ্গ প্রেমিক কবি রবিউল হুসাইন পত্মীবিয়োগের পর বাকি জীবন একাই কাটিয়েছেন সন্তান রবিনকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু বাস্তবে একাকীত্ব¡ কিংবা নিঃসঙ্গতা কখনই তাকে গ্রাস করিনি। স্থপতি, কারুশিল্পী, কবি, সাংবাদিক সকলের অবাধ যাতায়াতে তার বাড়ি ছিল সর্বক্ষণ সরগরম। কিন্তু তার কবিতায় প্রকাশিত অনুভূতি আমাদের ভাবিয়ে তোলে, প্রশ্ন জাগায় মনে, তবে কি কবি সবার মধ্যে থেকেও একা ছিলেন, ছিলেন আপনার মতো করে নিঃসঙ্গ। স্থপতি রবিউল হুসাইনের স্থাপত্যশৈলী তার চিন্তার জগতেরই বহির্প্রকাশ।
আলোচনার পর শুরু হয় একক সংগীতানুষ্ঠান। পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমা রায়।

×