এক্সপেরিমেন্টাল হলের লবিতে প্রদ্বীপ প্রজ্বালন করেন
সময়টা ছিল ১৯৭২ সালের ১০ আগস্ট। শত্রুমুক্ত স্বাধীন দেশে বইছে তখন শিল্পচর্চার অনুকূল পরিবেশ। সেই বাস্তবতায় সৃজনশীলতার বিকাশে নাট্যচর্চার তাগিদে সমবেত হয় একদল নাট্যকর্মী। তরুণ, নবীন, উদ্যম ও প্রতিভাবানদের সম্মিলিত প্রয়াসে প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল নাট্যচক্র। সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
সময়ের স্রোতধারায় বুধবার নাট্যদলটি পদার্পণ করল প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরে। সেই সাফল্যের উদ্্যাপনে ছিল দলের পক্ষ থেকে বিশেষ আয়াজন। সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে। আলোচনায় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সজ্জিত অনুষ্ঠানে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়।
বিকেল থেকেই নাট্যচক্রের সদস্যদের উপস্থিতিতে সরব অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। নাট্যদলটির কর্মীদের মাঝে বয়ে যায় প্রাণের উচ্ছ্বাস। সেই সুবাদে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। আর সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এ সময় ভেসে বেড়ায় ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ গানের সুরটি। সেই সুরের আশ্রয়ে পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ব আইটিআইয়ের সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করেন ফাল্গুনী হামিদ।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নাট্যচর্চার মধ্য দিয়েই নাট্যচক্রের সৃষ্টি। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক এই নাট্যদলটি নিজেদের মেধা,মনন ও সৃজনে পরবর্তীতে দেশের অন্যতম নাট্যদল হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমায় দলটি থেকে তৈরি হয়েছে অগণিত মেধাবী নাট্যাভিনেতা ও নির্দেশক।
সেদিনের সেই তরুণ নাট্যকর্মীরা বর্তমানে দেশের নাট্যাঙ্গনে ঈর্ষণীয় অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন নিজেদের প্রতিভার পরিস্ফুরণে। নাট্যানুরাগীদের প্রশংসা ও আশীর্বাদে নাট্যচক্রের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সফলতা অব্যাহত থাকুক। আরও বেশি করে নাটকের চর্চা করুক দলটি, এটাই আমার প্রত্যাশা। নাট্যচক্রের সবাই আজ নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। আলোচনা শেষে ছিল বর্ণিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
‘বঙ্গবন্ধু : নানা বর্ণে নানা রেখায়’ ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস স্মরণে বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘শোক থেকে শক্তি, শক্তি থেকে জাগরণ, জাগরণ থেকে সোনার বাংলা’ শিরোনামে ১০ দিনব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বুধবার বিকেলে অনলাইনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু : নানা বর্ণে নানা রেখায়’ গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনলাইন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এ এইচ এম লোকমান এবং পরিচালক নূরুন্নাহার খানম।