.
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী নিজামের মিষ্টির সুনাম রয়েছে দেশব্যাপী। ভোজন বিলাসীদের কাছে তেরশ্রী মিষ্টি ও দই অতি লোভনীয় খাবার। এ খাবার দেখলেই জিভে পানি আসে না এমন ভোজন বিলাসী খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিজামের মিষ্টি শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করছে। ইতোমধ্যে সৌদি, কুয়েত, কাতার ও মালেশিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে নিজামের মিষ্টি। দেশের বিভিন্ন স্থানে জামাই আদর, বিবাহ জন্মদিনের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায় একশ বছরে ধরে তেরশ্রী নিজামের মিষ্টি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মিষ্টির পাশাপাশি দধি ও ঘির খ্যাতি রয়েছে। গ্রাম বাংলার অনুষ্ঠানগুলোতে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে মিষ্টির বিকল্প নেই। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মিষ্টি কেনার জন্য বহু লোকজন তেরশ্রী নিজামের দোকানে আসেন। তবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বেশি লোকজন মিষ্টি কেনার জন্য আসে। নিজামের মিষ্টির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই মিষ্টি ১৫ দিনেও নষ্ট হয় না। চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে অধিক মুনাফার কথা না ভেবে গুণগতমান ও সুনামকে ধরে রাখতে ঘিওরের তেরশ্রী নিজামের মিষ্টি ঐতিহ্য রয়েছে সারাদেশে।
সাটুরিয়া উপজেলার হরগঞ্জ গ্রামে ১৯১৬ সালে মোঃ নিজাম উদ্দিন জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে বয়স ১০৬ বছর। পিতা প্রয়াত মোঃ শামসুদ্দিন। বাবা মার আদরের সন্তান ছিলেন নিজাম। আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি। ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাবা মারা যাবার পরে ঘিওরের পয়লা ইউনিয়নের পয়লা পূর্বপাড়া গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি এসে বসবাস শুরু করেন। জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি একটি হোটেল শুরু করেন। এর পরে ১৯৪০ সালে তেরশ্রীতে বাজারে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর তিনি মিষ্টি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘ ত্যাগ এবং কঠোর অধ্যবসায়ের কারণে তার তৈরি মিষ্টি অল্প দিনে সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আজকে তার ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হয়েছে।