সপ্তাহে ২ বার এভারেস্টের চূড়ায়!
এভারেস্টে একবার চড়া বহু পর্বতারোহীর স্বপ্ন। অথচ মাত্র এক সপ্তাহে দুইবার এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন কামি রিতা শেরপা। সব মিলিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় তার পদধূলি পড়েছে ২৪ বার। এ নিয়ে ২৩ বারের নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে দিয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬.৩৮ মিনিটে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
১৫মে ২৩তম এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন ৪৯ বছরের কামি রিতা। এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ে মঙ্গলবার (২১ মে) ফের এভারেস্টে পা রাখেন তিনি। এই বছরের মার্চ মাসে তার এই বছরের প্রথম ও ২৩তম অভিযান শুরু হয়েছিল। মে মাসের শেষ সপ্তাহে এসে সেই সংখ্যা ২৪ হয়ে গেল।
১৯৯৪ সালে ২৪ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো এভারেস্ট আরোহণ করেছিলেন। ২৪ বছর পেরিয়ে তার এভারেস্ট জয়ের সংখ্যা এখন চব্বিশ। তার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার বছরগুলো হলো- ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৭, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০০, ২০০২, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১২, ২০১৩ (২ বার), ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ (২ বার)। পাশাপাশি পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কে-টু, লোৎসে একবার বার করে জয় করেছেন তিনি। মানসালু জয় করেছেন দ্ইু বার, চো-ইউয়ের মাথায় চড়েছেন আট বার। এই সবগুলোর উচ্চতা আট হাজার মিটারের বেশি।
শেরপাদের পাহাড়ে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে একটা সহজাত অভিজ্ঞতা থাকেই। তারা পর্যটক এবং পর্বতারোহী মানুষদের গাইড হিসেবেও কাজ করে থাকেন। অনেক সময় উদ্ধারের কাজেও তাদের নামতে হয়। তাই এক্ষেত্রে কামি রিতা শেরপার কাজে লেগেছে অভিজ্ঞতা। কিন্তু পথটা খুব সহজ ছিল না। গতবার আরোহণের সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে। প্রাণনাশের আশঙ্কাও ছিল।
এভারেস্টে ওঠার ক্ষেত্রে নেপালের সলোখুম্বু জেলার থামে গ্রামের এই শেরপার পিছনেই রয়েছে আরও দুই শেরপা। আপা শেরপা, ফুরবা তাসি শেরপা যারা ২১ বার করে উঠেছেন ৮ হাজার ৮৪৮ মিটারের মাথায়।
এ বছর অন্যতম ব্যস্ততম সময় দেখছে এভারেস্ট। অন্তত ৩৭৮ জন শৃঙ্গ আরোহণ করার ব্যাপারে নেপাল সরকারের অনুমতি নিয়েছেন।
.
যে বাজারে বিক্রেতা শুধুই নারী
বাজার বলতে আমরা সেই স্থানকেই বুঝি যেখানে নানা ধরনের ক্রেতা ও বিক্রেতার সমাগম ঘটে। তবে ভারতের মণিপুর প্রদেশে এমন একটি বাজার রয়েছে যেখানে ক্রেতা নানা ধরনের হলেও বিক্রেতা সবাই নারী। এখানে পুরুষদের বাজার থেকে কেনাকাটা করার অনুমতি থাকলেও ব্যবসা করার অনুমতি নেই। তবে এই নিষেধাজ্ঞা কিন্তু সরকারী আদেশ নয়। যদি কোন পুরুষ এখানে ব্যবসা করার চেষ্টা করে তবে সব নারীরা এক জোট হয়ে প্রতিরোধ করে।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে অবস্থিত ওই বাজারের নাম ‘মাদার মার্কেট’। মণিপুরিরা ‘খেইতাল’ বলে। বাজারে প্রায় পাঁচ হাজার নারী ব্যবসায়ী রয়েছেন। এটাই এশিয়া মহাদেশের নারী দ্বারা পরিচালিত সবচেয়ে বড় বাজার। আয়তনে বড় হলেও বাজারটি বেশ ছিমছাম। এর গোড়াপত্তন প্রায় পাঁচশ বছর আগে। ওই সময়ে মণিপুরের অবস্থা ছিল টালমাটাল। অধিকাংশ পুরুষই যুদ্ধ বিগ্রহ নিয়ে পড়ে থাকতো। ফলে উপার্জনের জন্য নারীরা ব্যবসা শুরু করে। সেই থেকে শুরু। এরপর কালের বিবর্তনে বাজারের পরিধি বেড়েছে। বেড়েছে নারী ব্যবসায়ীর সংখ্যা। দৈনন্দিন সদাইপাতি থেকে শুরু করে কাপড়, হস্তশিল্প সবই পাওয়া যায় বাজারে। অন্য বাজারের চেয়ে এখানকার জিনিসপত্র তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া যায় বলে সকাল-বিকাল এখানে ক্রেতার ভিড় লেগেই থাকে। বিশেষ করে উৎসব-পার্বণে এই বাজার থেকে কেনাকাটা করা মণিপুরবাসীদের কাছে এতিহ্যও বটে।
লিসারাম দেবী প্রায় তিন দশক ধরে হস্তশিল্পের জিনিস বিক্রি করছেন এই বাজারে। বিবিসিকে এক সাক্ষাতকারে তিনি এই বাজারকে নারীর ক্ষমতায়তনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন। শুধু লিসারাম দেবীই নন, তার মতো হাজারো মণিপুরি নারীর জন্য ক্ষমতায়ন ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই বাজার।
.
শত ঘণ্টার পণ্ডশ্রম
দুর্ভাগা সঙ্গীতশিল্পীদের নামের যদি কখনও তালিকা করা হয়, সেখানে কার্লোস সিলভারের নামটা ওপরের দিকেই থাকবে। গিনেস বুকের রেকর্ড পাতায় নাম তুলতে টানা একশ ছয় ঘণ্টা গান গেয়েছেন ডোমিনিকান রিপাবলিকের এই সংগীতশিল্পী। কিন্তু রেকর্ডের খাতায় তার নাম তো ওঠেইনি বরং সামান্য ভুলের জন্য তার সবকিছুই পণ্ডশ্রমে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি ক্যানাল টিভিকে নিজের ভুলের কথা জানিয়েছেন কার্লোস। গান গেয়ে রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে গিনেস কর্তৃপক্ষের নিয়ম হলো প্রতি গানের মাঝখানে মাত্র ত্রিশ সেকেন্ড বিরতি নিতে হবে। এর বেশি বিরতি নিলেই নিয়ম ভঙ্গের জন্য রেকর্ড বাতিল হয়ে যাবে।
কার্লোস ভুলটা করেছেন এখানেই। তিনি প্রতি গানের মাঝখানের বিরতিতে সময় নিয়েছেন দুই মিনিটের কাছাকাছি। যার কারণে গিনেস তার নাম রেকর্ড বুকে তুলতে আপত্তি জানিয়েছে। অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে কার্লোস জানিয়েছেন, তিনি গানের মাঝখানে দুই মিনিট বিরতি নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু অনেক সময় তিনি কয়েক ঘণ্টা টানা গান গেয়েছেন। ফলে কিছু সময় তিনি বাঁচিয়েছেন যা হিসাব করলে দুই মিনিট বিরতি তিনি নিতেই পারেন।
তবে গিনেস কর্তৃপক্ষ তার এই যুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। নিয়মের ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে কার্লোসও এত সহজে ছেড়ে দিতে রাজি নন। তিনি বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কারণ রেকর্ড গড়তে গিয়ে পঞ্চাশবার ব্রেন ইলেকট্রিক শক খেয়েছেন, দুইবার হার্ট অ্যাটাকের উপক্রম হয়েছে তার। এই অমানসিক পরিশ্রম তিনি বৃথা যেতে দিতে চান না।
শাহিদুল ইসলাম
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: