
ছবি: সংগৃহীত।
আনুমানিক ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়েছিল ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে। ইতিহাসে এই গণহত্যা “হলোকাস্ট” নামে পরিচিত।
হিটলারের ইহুদি-বিদ্বেষ জন্ম নেয় তার শৈশব থেকেই। ভিয়েনার একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি হতে গিয়ে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রদের প্রভাবে একাধিকবার প্রত্যাখ্যাত হন তিনি। অনেকেই মনে করেন, এখান থেকেই তার মনে ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষের বীজ বপিত হয়।
এরপর, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্যও তিনি ইহুদিদের দায়ী করেন। তার বিশ্বাস ছিল, ইহুদিরাই রাজতন্ত্র উৎখাত করে জার্মানিকে দুর্বল করে দেয়।
তাছাড়া, হিটলারের মতে, জার্মান অর্থনীতি ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে ইহুদি ব্যবসায়ী ও বুদ্ধিজীবীরা। তার কাছে এটি ছিল এক ষড়যন্ত্র, যা ‘বিশ্ব ইহুদি চক্রান্ত’ হিসেবে সে কল্পনা করত। এই ষড়যন্ত্র রুখতেই তার আত্মঘাতী ও অমানবিক সিদ্ধান্ত — “ইহুদি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।”
ইতিহাসবিদদের মতে, ইহুদি নিধনের পিছনে কেবল রাজনীতি বা প্রতিশোধ না — বরং ছিল হিটলারের বিকৃত বিশ্বাস ও ভ্রান্ত শ্রেষ্ঠ জাতি তত্ত্ব (Aryan Supremacy)। তিনি মনে করতেন, জার্মানির শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করতে হলে ইহুদিদের ধ্বংস করা জরুরি।
১৯৪১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর আক্রমণ চালিয়ে নাৎসিরা প্রাথমিক সাফল্য পায়। এই সফলতা হিটলারকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, এখন আর তার পথে কেউ দাঁড়াতে পারবে না।
এই আত্মবিশ্বাস থেকেই শুরু হয় "ফাইনাল সল্যুশন" নামে পরিচিত ভয়ংকর পরিকল্পনা—যার লক্ষ্য ছিল ইউরোপ থেকে ইহুদি জাতিকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।
এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ থামে ১৯৪৫ সালের এপ্রিল মাসে, যখন নাৎসি বাহিনী হেরে যায় এবং হিটলার আত্মহত্যা করেন।
হলোকাস্ট শুধু একটি গণহত্যা নয়, এটি এক ভয়ংকর শিক্ষা—যেখানে বিদ্বেষ, ভুল বিশ্বাস, এবং চরমপন্থা কত ভয়ংকর পরিণতি আনতে পারে তা মানব জাতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
নুসরাত