ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া দৃষ্টিনন্দন সড়কে ৩৭টি পয়েন্টে ভাঙন

নিজস্ব সংবাদদাতা,খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৩:২০, ১৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৩:৪৯, ১৫ জুলাই ২০২৫

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া দৃষ্টিনন্দন সড়কে ৩৭টি পয়েন্টে ভাঙন

ছবি: জনকণ্ঠ

বর্ষার শুরুতে ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়িতে ভূমি ধসের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে মহালছড়ি- সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক। সড়কটি দৃষ্টিনন্দন সড়ক হিসেবে পরিচিত। কয়েক দফায় ভারী বর্ষণে ২৪ কিলোমিটার নান্দনিক এ সড়কটির ৩৭ পয়েন্টের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধস ও দেবে গিয়ে যান চলাচল করছে ঝুঁকিতে। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে রাস্তাটি। দ্রæত ভাঙন কবলিত অংশগুলো সংস্কারের দাবি স্থানীয় ও চলাচলকারীদের। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,মহালছড়ি- সিন্দুকছড়ি-–জালিয়াপাড়া সড়কটি খুবই গুরত্বপূর্ণ। বর্ষায় সড়কের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বর্ষণের কারণে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি-জালিয়া আঞ্চলিক সড়কের ৩৭ পয়েন্টের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধস ও দেবে গিয়ে যান চলাচল করছে ঝুঁকিতে। পাহাড় ধসে মাটি পড়ায় সড়কের বেশকিছু পয়েন্টে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।


 স্থানীয় ব্যবসায়ী সুইথৈই মারমা ও রফিকুল ইসলাম া জানিয়েছেন মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া- সিন্ধুকছড়ি ২৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ সড়কটি নতুন করে তৈরি করার পর মহালছড়ি উপজেলার সাথে  চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ যেকোনো জায়গায় পণ্য আনা-নেওয়া সহ সহজে আসা-যাওয়া করা যায়। তেমনি সড়কটির  সৈন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়ে। এখনো এই সড়ক দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন বহু পর্যটক।  গেলো কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কাটাপাহাড় এলাকায় বিশাল ভাবে দেবে গেছে সড়কটি। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে গিয়ে ও  পাহাড়ধসের কারণে যানবাহনগুলো চলাচল করছে ঝুঁকিতে।  স্থানীয় ও চলাচলকারীরা জানান সড়কটিতে কাটাপাহাড় এলাকায় এক অংশ দেবে গেছে, বৃষ্টির পানিতে আর যেন দেবে না যায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে, কোন রকম বালু ও কংক্রিট দিয়ে ঠিক করলেও ঝুঁকি রয়েছে, এছাড়াও সড়কে বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে গেছে ও পাহাড় ধসে পড়েছে।  মহালছড়ির উৎপাদিত সকল কৃষিপণ্যসহ সকল ধরনের মালামাল এই সড়ক দিয়ে আনা-নেওয়া করা হয়। যদি সড়কটি মেরামত করা না হয়, তাহলে তাদের আবার খাগড়াছড়ি হয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করতে হবে। এতে তাদের দূরত্ব ও খরচ দুটোই বাড়বে। দ্রæত স্থায়ীভাবে মেরামত না করলে, বৃষ্টিতে যে কোন মুহূর্তে ধসে গিয়ে বড় ধরনের দুঘর্টনা ঘটতে পারে। তাই দ্রæত ভাঙন কবলিত অংশগুলো সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।তারা জানান  দ্রæত সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামত করতে হবে। সড়কটি ভেঙে গেলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।


খাগড়াছড়ি ট্রাকমালিক সমিতির সভাপতি আসলাম কালু জানান বড় ক্ষতির আগেই সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা দরকার । তিনি বলেন, ‘সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় ধস হয়েছে। যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে হলে সড়ক বিভাগকে অনুরোধ করব তারা যাতে দ্রæত সড়কটি মেরামত করে। এতে মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে ।তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানে ম্যাসিভ ধস হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাহাড় ধসের মাটি সরানো হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে পাহাড় ধস রোধে আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা কাজ করব।’
উল্লেখ্য  ২০২৩ সালে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (২০ ইসিবি) কর্তৃক নির্মিত হয়। পাহাড়ি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি শুধু স্থানীয় জনগণের জন্য নয়, পর্যটন এবং পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাব্বির

×