ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক ৯টি খাবার

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ১৫ জুলাই ২০২৫

লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক ৯টি খাবার

ছ‌বি: সংগ্রহীত।

লিভার আমাদের শরীরের ডিটক্স সেন্টার। এটি রক্ত পরিষ্কার করা, বিপাক নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন সংরক্ষণ এবং নানা হরমোন ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে সঠিক খাবার গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ৯টি খাবার, যা লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ও দীর্ঘমেয়াদে লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

নিচে লিভারবান্ধব এই খাবারগুলো তুলে ধরা হলো—

১. কফি:
কফি লিভারের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ফ্যাটি লিভার, সিরোসিস ও দীর্ঘমেয়াদি লিভার রোগের ঝুঁকি কমায়। কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফেইক অ্যাসিড লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। দিনে অন্তত ৩ কাপ কফি পান করলে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়।

২. চা (বিশেষ করে গ্রিন টি):
গ্রিন টি লিভারের এনজাইমের মাত্রা কমাতে পারে, বিশেষ করে যারা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজে (NAFLD) ভুগছেন। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস লিভার ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়।

৩. বেরি জাতীয় ফল:
ব্লুবেরি ও ক্র্যানবেরির মতো বেরিগুলোতে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিনস, যা লিভারে জমে থাকা চর্বি (হেপাটিক স্টিয়াটোসিস) হ্রাস করে এবং লিভার কোষের স্বাস্থ্য উন্নত করে।

৪. অলিভ অয়েল:
অলিভ অয়েলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট লিভার এনজাইমের মাত্রা কমায় এবং লিভারে চর্বি জমা প্রতিরোধ করে। এটি লিভার পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি প্রদাহও কমাতে সাহায্য করে।

৫. চর্বিযুক্ত মাছ:
স্যালমন, সার্ডিন ও ম্যাকেরেলের মতো মাছগুলোতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারের প্রদাহ কমায় এবং চর্বি জমে যাওয়া রোধ করে। এটি লিভারের দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

৬. রসুন:
রসুনে থাকা সেলেনিয়াম ও অ্যালিসিন লিভারের এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সহায়তা করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

৭. আঙ্গুর:
লাল ও বেগুনি আঙ্গুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগগুলো লিভারের প্রদাহ কমায়, কোষ ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্তর বাড়ায়। এটি লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর।

৮. বিটের রস:
বিটে রয়েছে নাইট্রেট ও বিটালেইনস নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভারের অক্সিডেটিভ ক্ষতি ও প্রদাহ হ্রাস করে। নিয়মিত বিটের রস পান করলে লিভারের স্বাস্থ্য উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়।

৯. ক্রুসিফেরাস সবজি:
ব্রোকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, বাঁধাকপি, কেল ও ফুলকপি—এই সবজিগুলোতে থাকে গ্লুকোসিনোলেটস। এই উপাদান লিভারের ডিটক্স এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং লিভার কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।

লিভারের সুস্থতা বজায় রাখতে কেবলমাত্র ওষুধ নয়, খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ৯টি খাবার নিয়মিত ডায়েটে রাখলে লিভার থাকবে সুস্থ, কর্মক্ষম ও রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মিরাজ খান

×