
ছবি: সংগ্রহীত।
মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। এটি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া থেকে শুরু করে হজম ও বিপাক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু প্রাকৃতিক খাবার লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে এবং সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নিচে তুলে ধরা হলো এমন ৯টি খাবার যা প্রাকৃতিকভাবে লিভার পরিষ্কারে সহায়তা করে—
১. বিটরুট: বিটরুট জুস সেবনে লিভার এনজাইম যেমন ALT এবং AST-এর মাত্রা কমে, যা লিভারের চাপের প্রধান সূচক। এটি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) রোগীদের জন্য উপকারী এবং হেপাটিক স্টিয়াটোসিস (লিভারে চর্বি জমা) কমায়।
২. লেবু: লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে উদ্দীপ্ত করে ও হজমে সহায়তা করে। এটি লিভার পরিষ্কারে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৩. গ্রিন টি: গ্রিন টিতে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভারের ফাংশন উন্নত করে ও চর্বি জমা প্রতিরোধ করে। এটি লিভারের জন্য সুরক্ষামূলক হিসেবে কাজ করে।
৪. আখরোট: প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ আখরোট লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ও ওমেগা-৩ লিভারে জমে থাকা অ্যামোনিয়া নির্গমনে সহায়তা করে এবং অক্সিজেন প্রবাহ উন্নত করে।
৫. রসুন: রসুন লিভার এনজাইম সক্রিয় করে, যা ডিটক্স প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। এতে সেলেনিয়াম থাকে, যা প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে।
৬. ব্রকোলি: ক্রুসিফেরাস সবজি ব্রকোলি লিভার ফাংশন উন্নত করতে কার্যকর। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এটি যুক্ত করা হলে লিভার দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকে।
৭. পেঁয়াজ: পেঁয়াজে রয়েছে কুয়ারসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে, যা লিভার ক্ষতির একটি মূল কারণ।
৮. কফি: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন তিন কাপ কফি পান করলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি ২০% কমে এবং দীর্ঘমেয়াদি লিভার রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৯% পর্যন্ত হ্রাস পায়।
৯. বেরিজ: ব্লুবেরি ও ক্র্যানবেরির মতো বেরিগুলো অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এটি লিভারে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং প্রদাহ প্রতিরোধ করে, যা লিভার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার সুস্থ রাখতে এসব খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাই ভালো। তবে যেকোনো বড় পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মিরাজ খান