ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পুলিশ প্রহরায় ক্যাম্পাস ছাড়লেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৩:৩৯, ১৫ জুলাই ২০২৫

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পুলিশ প্রহরায় ক্যাম্পাস ছাড়লেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ

ছবি: জনকণ্ঠ

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির বিষয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় আশ্বাসমূলক বক্তব্য ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পেয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অবশেষে আর ‘কলেজে না আসার ঘোষণা’ দিয়ে পুলিশ প্রহরায় রাতে কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঞা। সোমবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে তাঁর বাসায় পৌঁছে দেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি জানান এবং দুই কার্যদিবস সময় দেন। সোমবার (১৪ জুলাই) কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে অধ্যক্ষের সাথে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন। কিন্তু তারা অধ্যক্ষের নিকট থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৯ দফা দাবিগুলো হচ্ছে: কলেজে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন, ডিগ্রি শাখার জন্য পৃথক ও আধুনিক ক্যাম্পাস স্থাপন, সিসিটিভি ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার, বহিরাগত, মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস ও মাইক্রোবাস সার্ভিস চালু, আবাসিক হল ও আশপাশের হোটেল এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন, সুপেয় পানি, আধুনিক ওয়াশরুম এবং যুগোপযোগী শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আলাদা ফান্ড গঠন, কলেজের সব ধরনের আয়-ব্যয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, সোমবার দুপুর আমাদের দাবির বিষয়ে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে আশ্বাসমূলক বক্তব্য ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পেয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সংলাপ ভেঙে বের হয়ে আসেন এবং ‘এক দফা এক দাবি, অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই’ স্লোগান তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে তিনি (অধ্যক্ষ) মসজিদে আশ্রয় নিয়ে সেখানে তাকে রাতে উদ্ধার পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল মজিদ জানান, পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়ায় রাত ১০টার দিকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে আসেন। এ সময় পুলিশ অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যক্ষ এ কলেজে আর আসবেন না মৌখিক এ ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের সকল সেক্টর জেনেছে। দ্রুত নতুন অধ্যক্ষের বিষয়ে আদেশ হবে। আমি রুটিন দায়িত্ব পালন করব। আর্থিক কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। পরীক্ষা-ক্লাস যথানিয়মে চলবে।’

তবে রাতে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঞার দুটি ব্যক্তিগত নম্বরে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিকাল থেকে বিক্ষোভ করছিল। তবে রাতের দিকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ অধ্যক্ষকে রাত সোয়া ১১টার দিকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।

সাব্বির

×