ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢামেকের জরুরি বিভাগের বাথরুমের দরজা ভেঙে মিললো ঘুমন্ত মাদকসেবী

প্রকাশিত: ১৭:১১, ২১ মে ২০২২

ঢামেকের জরুরি বিভাগের বাথরুমের দরজা ভেঙে মিললো ঘুমন্ত মাদকসেবী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি বাথরুমকে ঘিরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকে হইচই। কেউ বলছেন বাথরুমের ভেতরে মরদেহ পড়ে আছে। আবার কেউ বলছেন হতে পারে দুই জন। এদের মধ্যে একজন বোরকা পড়া। শুরু হয়ে যায় জরুরি বিভাগের চারিদিকে হৈ চৈ, চিল্লাচিল্লি। খবর পেয়ে সেখানে আসেন সরকারি সিনিয়র স্টাফ, ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমানসহ অন্যান্য লোকজন। শনিবার (২১ মে) গুঞ্জন ওঠে ঢামেক জরুরি বিভাগে প্রবেশের বাম দিকে একটি খালি রুমে (ট্রলি রুম) বাথরুমে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় কেউ পড়ে আছেন। কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ঘণ্টাব্যাপী দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। পরে স্টাফদের পাশাপাশি খবর দেয়া হয় হাসপাতাল পুলিশকে। এরই মধ্যে অনেকে বাথরুমের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। তারা একেক জন একেক মন্তব্য করতে থাকেন। কেউ বলেন বোরখা পরা কোন ব্যক্তি, আবার কেউ বলতে থাকেন লুঙ্গি ও কালো রঙের বোরকা পরা দুইজন আছেন। পরে সেখানে অবস্থান নেন হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া। তিনিও নিজ কর্তব্য থেকে একটুও পিছপা হতে চাননি। সঙ্গে থাকা ওয়ারলেস সেট বের করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একটি বাথরুমের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। ভেতরে কেউ পড়ে আছেন। হয়তোবা মারা গেছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে তিনি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হককেও বিষয়টি জানান। এরই মধ্যে সেখানে শতাধিক লোক জড়ো হন। সরকারি স্টাফদের পাশাপাশি রোগীর স্বজনরাও সেখানে অবস্থান নেন। তাদেরও কৌতুহল জাগতে থাকে আসলে বাথরুমে কী পড়ে আছে, মরদেহ না অন্যকিছু। কিছুক্ষণ পরে ঢামেক পুলিশক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, পুলিশের নির্দেশনাসহ হাসপাতাল থেকে নির্দেশ পেয়েছি বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলার জন্য। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ পুলিশের উপস্থিতিতে বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান কালো রঙের একটি পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পরা এক যুবক দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। পরে সেখান থেকে মনির নামে ওই যুবককে জাগিয়ে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে বলেন, ‘বাথরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কোনো হুঁশ ছিল না আমার। ’ পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, এরা হচ্ছে ভবঘুরে মাদকসেবী। মেডিক্যালের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে মাদক সেবন করেন। তারা হাসপাতালে বাথরুমকে মাদক সেবনের উপযুক্ত স্থান করে। প্রায়ই এদের ধরা হয়।
×