ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের গ্রামীণ হাসপাতাল পেল বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

বাংলাদেশের গ্রামীণ হাসপাতাল পেল বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের একবারেই প্রত্যন্ত গ্রামের একটি হাসপাতাল পেয়েছে বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি। তবে সেবার মানের দিক থেকে নয়, ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবন’ হিসেবে ‘রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কার ২০২১’ স্বীকৃতি পেয়েছে হাসপাতালটি। ছোট ছোট ইটের তৈরি এবং ভেতর দিয়ে এঁকে-বেঁকে খাল বয়ে যাওয়া বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি পাওয়া হাসপাতালটি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় অবস্থিত। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (রিবা) আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবন’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালটি জলবায়ু সচেতন নক্সায় তৈরি করা। হাসপাতালের এই ভবনটি বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি অর্জনের পথে জার্মানির বার্লিনের জেমস সায়মন গ্যালারি ও ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের ল্যাঞ্জব্রো সেতুকে হারিয়ে দিয়েছে। ৮০ শয্যাবিশিষ্ট ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালটির নক্সা করেছেন স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী। বার্লিন ও ডেনমার্কের বাকি দুটি স্থাপনার নক্সা করেছেন যথাক্রমে ডেভিড চিপারফিল্ড এবং উইলকিনসন আয়ার। স্থপতি কাশেফ মাহবুব ইতোমধ্যেই আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। হাসপাতালটিতে পানিকে প্রধান সূচনাদ্বার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পুরো হাসপাতালের ভেতর দিয়েই এঁকে-বেঁকে বয়ে গেছে ছোট্ট খাল। বর্ষাকালে এই খালটি বৃষ্টির মূল্যবান পানি ধরে রাখে এবং গ্রীষ্মের মাসগুলোতে সেই পানি পুরো আঙ্গিনাকে ঠা-া রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া ভেতর দিয়ে বয়ে চলা এই খালটি হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিভাগ এবং বহির্বিভাগকে পৃথক করে রেখেছে। অর্থাৎ কোন রকমের দেওয়াল ছাড়াই কেবল একটি খালের মাধ্যমে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিভাগ এবং বহির্বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হয়েছে। ঢাকাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আরবানার পরিচালক এই স্থপতি বলছেন, ‘এখানে হাসপাতালের সব জায়গায় পানি রয়েছে। কিন্তু সবসময় এটি দরকারি ধরনের নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলেছে। আর এ কারণে আশপাশের শস্য খেতগুলোতে পানি জমে যাওয়ায় সেগুলো চিংড়ির ঘেরে রূপান্তরিত হয়েছে।’ অবশ্য ‘মাটির ওপরে’ বানানো এনজিও ফ্রেন্ডশিপের তৈরি এটিই প্রথম হাসপাতাল। এর আগে নৌকার মাধ্যমে কয়েকটি ভাসমান হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন কাশেফ চৌধুরী। স্থায়ীভাবে তৈরি প্রথম এই হাসপাতাল নির্মাণে খরচ হয়েছে ২০ লাখ ডলারেরও কম। স্থানীয়ভাবে তৈরি ইট দিয়ে নির্মাণ করা এই হাসপাতালের ভবনটি প্রচুর পরিমাণ আলো-বাতাস চলাচলের উপযোগী রেখেই নির্মিত হয়েছে। একইসঙ্গে হাসপাতালটিতে বিদ্যুতের সর্বনিম্ন ব্যবহারও নিশ্চিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ নবেম্বর রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কারের জন্য ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের’ সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে সাতক্ষীরার এই ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সঙ্গে জার্মানির জেমস সায়মন গ্যালারি এবং ডেনমার্কের ল্যাঞ্জব্রো সেতুও ছিল।
×