নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আধাঘণ্টা আগে-পরে জন্ম নেওয়া নবজাতক বদল নিয়ে ৬ ঘণ্টা ধরে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মীমাংসা করেছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে এ গোলমাল চলে। ভুলক্রমে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে নবজাতক বদলানো হয়েছে, এনিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে হাসপাতালে একটি ছেলে নবজাতকের জন্ম দেন জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মড়রা গ্রামের ফেরদৌসী আক্তার।
এর আধাঘণ্টা পরে সেখানে আরেকটি মেয়ে নবজাতকের জন্ম দেন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের মাসুম মিয়ার স্ত্রী। শিশুদের স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ণ ইউনিটে (স্ক্যানু) রাখা হয় দুইটি বাচ্চাকেই। মায়েরা ভর্তি ছিলেন হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে।
সকাল ৯টায় মাসুম মিয়া তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য স্ক্যানু থেকে মায়ের কাছে আনতে যান। এ সময় তিনি নিজের মেয়ে নবজাতককে না এনে নিয়ে আসেন ফেরদৌসী আক্তারের ছেলে নবজাতকটিকে। কিছুক্ষণ পর ফেরদৌসির স্বজনরা বাচ্চা আনতে গেলে দেখেন তাদের বাচ্চাটি নেই। এরপর তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন ও বাচ্চা চুরি হয়েছে বলে হুলস্থুল শুরু করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সদর মডেল থানার পুলিশ। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা এনিয়ে গোলমালের পর বিকেল ৩টায় ফেরদৌসীর ছেলে বাচ্চাটিকে মাসুমের স্ত্রীর পাশে পাওয়া যায়। এ সময় পুলিশ যার যার নবজাতক তার তার হাতে তুলে দেয়।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মোমিন উদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল বাচ্চাটি চুরি হয়েছে। পরে গাইনী ওয়ার্ডে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাটি পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন, মাসুম মিয়া জানিয়েছেন তিনি ভুলক্রমে বাচ্চা বদল করে নিয়েছেন। যেহেতু একটি বাচ্চা ছেলে ও আরেকটি মেয়ে, তাই কিছুটা সন্দেহ থেকেই যায়। এনিয়ে তদন্ত চলছে।
সরেজমিন গেলে অনেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তারা মনে করেন, এ হাসপাতালে নামমাত্র সেবা। রোগীদের নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। এ কারণেই নবজাতক বদলের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।