ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ১৮ দিনের সন্তান বিক্রি

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ২২ জানুয়ারি ২০২২

প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ১৮ দিনের সন্তান বিক্রি

অনলাইন ডেস্ক ॥ অভাবের কারণে পিরোজপুরের নেছারাবাদে ১৮ দিনের শিশুকে বিক্রি করে দিলেন পিতা। আর এতে শিশুটির পিতাকে দশ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রির টাকা নিয়ে গেলো স্থানীয় একটি প্রতারক চক্র। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দুর্গাকাঠি গ্রামে। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাতে শিশুটিকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার দুর্গাকাঠি গ্রামের পরিমল ব্যাপারী তার ১৮ দিনের কন্যা শিশুকে বিক্রি করে দেন ঢাকার নাম না জানা এক দম্পতির কাছে। ওই ক্রেতা দম্পতির কাছ থেকে স্থানীয় একটি প্রতারক চক্র ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বিনিময় বিক্রি করেন। গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ওই শিশুটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রতারক চক্রের দুই সদস্য একই গ্রামের বিজন হালদার ও রনজিত কুমার এলাকা থেকে আত্মগোপন করেন। শিশুটির পিতা পরিমল ব্যাপারী জানান, ‘আমি খুবই গরিব, নিজের জায়গা-জমি নাই। অন্যের ঘরে স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে বাস করি। আমি ও আমার স্ত্রী মানুষের কাছে হাত পেতে যা পাই তা দিয়ে চাল কিনে কোনো রকম দিন কাটাই। প্রায় ৩৪-৩৫ দিন আগে আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। প্রায় ১৬-১৭ দিন আগের কথা, তার বয়স যখন ১৮ দিন তখন শিশুটিকে বিক্রি করে দেই’। তিনি আরও জানান, ‘আমাদের অভাবের কথা শুনে আমাদের গ্রামের বিজন হালদার আমাকে বলেন তোমার বাচ্চাটি দিয়ে দাও। বিক্রি করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেবো। পরে দেখি ঢাকা থেকে প্রাইভেট গাড়িতে করে এক বড় লোক পরিবার আসে। তারা বিজনের কাছে টাকা দেন। আমার বাচ্চাটি নিয়ে যান। পরে বিজন আমাকে দশ হাজার টাকা দেয়। তবে আমি ওই বড়লোক পরিবারের নাম-ঠিকানা জানি না’। সন্তান বিক্রেতা পরিমলের স্ত্রী কাজল বলেন,‘ সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকে আমি অসুস্থ ছিলাম। ওর মুখখানও দেখতে পারি নাই। আমি সুস্থ হইয়া জানছি আমার মাইয়াডা বিক্রি হইয়া গ্যাছে। মাইয়াডার কথা মনে পড়লে আমার বুকটা ফাইট্টা যায়’। সমেদয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমাউন আহম্মেদ বলেন, বিজন এলাকায় একজন প্রতারক প্রকৃতির লোক। শুনেছি সম্প্রতি সে রনজিৎকে নিয়ে পরিমলকে ফুসলিয়ে তার (পরিমল) ১৮ দিনের কন্যা শিশুকে ঢাকার এক বড় লোকের (ধনাঢ্য) কাছে এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সেখান থেকে পাওয়া টাকার মাত্র দশ হাজার টাকা শিশুটির অসহায় পিতাকে দিয়েছে। যদিও বিজন হালদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে নেছারাবাদ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. আবির মোহাম্মাদ হোসেন জানান, ওই শিশুটিকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাচ্চাটি বিক্রির কথা শুনিনি। ওই লোকের কাছে পালতে দিয়েছিল বলে শুনেছি। শিশুটিকে আগামী রবিবার (২৩ জানুয়ারি) আদালতে দেওয়া হবে।
×