ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠিকাদারি কাজে এফবিআই’র সাজাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান!

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২০ জানুয়ারি ২০২২

ঠিকাদারি কাজে এফবিআই’র সাজাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৫ সালে একটি কোম্পানির নিজস্ব প্যাটেন্টে ও মূল্যবান তথ্য চুরির দায়ে দক্ষিন কোরিয়ার কোলন কর্পোরেশনের সহযোগি প্রতিষ্ঠান কোলন ইন্ডাষ্ট্রিজকে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। অথচ ২০১৬ সাল থেকে সেই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে ঠিকাদারি কাজ করছে। বিতর্কিত সাজাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হলে মূল্যবান তথ্য পাচারের আশঙ্কা থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই। জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি ‘কোলন কর্পোরেশন’-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘কোলন ইন্ডাষ্ট্রিজের বিরুদ্ধে বিশ্ববিখ্যাত ডুপন্ট কোম্পানীর নিজস্ব প্যাটেন্টে ও মূল্যবান তথ্য চুরির এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’ র হাতে ধরা পরে। এফবিআই আদালতে উপস্থিত হয়ে স্বীকারোক্তি দিলে ওয়াশিনটন ডিসির এসিস্ট্যান্ট এ্যার্টনী জেনারেল লেজলি কার্ডওয়েল ‘কোলন কর্পোরেশন’-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘কোলন ইন্ডাষ্ট্রিজ’কে ৮৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৭৫ মিলিয়ন ডলার ধার্য্য করে। এফবিআই’র ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, ‘কোলন ইন্ডাষ্ট্রিজ’ স্বীকার করেছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও তারা তথ্যচুরির ঘটনায় জড়িত ছিল। মূলত রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে নিজেরা বিনিয়োগ না করে অন্যদের তথ্যপ্রযুক্তি চুরি করে লাভবান হবার কৌশল অবলম্বন করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোলন কর্পোরেশন এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘কোলন গ্লোবাল কর্পোরেশন’ ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারী প্রকল্পে কাজ করছে। আরও বেশ কিছু প্রকল্পে ঠিকাদারী কাজ নিতে এখন বেশ তৎপর প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি বাংলাদেশে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে ‘কোলন গ্লোবাল কর্পোরেশন’ নানা ধরনের সমস্যার জন্ম দিয়েছে। জানা যায়, মূল দরপত্রের বিভিন্ন শর্ত ও তথ্য-উপাত্ত গোপন রেখে সাব-কন্ট্রাক্টর দিয়ে কাজ করিয়ে বাংলাদেশী অনেক ছোট-বড় সাব-কন্ট্রাক্টরকেই সর্বশান্তের পর্যায় নিয়ে গেছে কোলন। শুধু তাই নয়, ঠিকাদারকদের মালামাল চুরি, প্রাপ্য বিল না দেয়, লোকদেরকে মারধর করাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হবার কারনে তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। জানা যায়, হাইকোর্টেও তাদের নামে একাধিক মামলা চলমান। এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কোলন কর্পোরেশন বাংলাদেশের প্রতিনিধি জি হুন কিমকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি। জানতে চাইলে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক মোঃ শাহ্ মাহবুব বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত নই। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে কোন দূর্নীতিগ্রস্ত কিংবা সাজাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হলে দেশের উন্নয়ন হুমকির মুখে পরবে। একইসঙ্গে দেশের মূল্যবান তথ্য পাচারের আশঙ্কাও থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
×