ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষকের আহাজারি

কলাপাড়ায় এক কৃষকের ফলনধরা ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১৭ জানুয়ারি ২০২২

কলাপাড়ায় এক কৃষকের ফলনধরা ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ কলাপাড়ায় ভূমিহীন কৃষক দেলোয়ার খলিফার প্রায় ১০ হাজার ফলন্ত তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম এই তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলছে বলে কৃষক দেলোয়ারের অভিযোগ। দেলোয়ার বেড়িবাঁধের স্লোপে ১৫ হাজার তরমুজ গাছ লাগিয়েছিলেন। বর্তমানে এ কৃষকের পরিবারে চলছে আহাজারি। কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম চাপলী গ্রামের দেলোয়ারের এমন সর্বনাশ করা হয়েছে। তবে সদ্য পুনরাকৃতিকরনের বেড়িবাঁধের স্লোপ কুপিয়ে নষ্ট করায় এবং বাঁধের মাটি ক্ষয়রোধে বনবিভাগের লাগানে ডুমুর গাছ পর্যন্ত নষ্ট করা হয়েছে বলে প্রকল্পের প্রকৌশলী এবং বনবিভাগের বিট কর্মকর্তার পাল্টা অভিযোগ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার জানান, তিনি কয়েক বছর ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের স্লোপে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে আসছেন। এবছরও বনবিভাগের বিট কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে দুই মাস আগে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে তরমুজের আবাদ করি। এমনকি ওখানকার বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনকে এ বাবদ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু মোশাররফ হোসেন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম তার ফুল ও ফল ধরা দশ হাজার তরমুজ রবিবার দুপুরে উপড়ে ফেলেছেন। কৃষক দেলোয়ার জানান, ওনাদের হাতেপায়ে ধরে কান্নাকাটি করে অনুরোধ করেছিলাম আর একটা মাস সময় দিলে ফলন বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি। এমনকি গাছ উপড়ে ফেলে উল্টো মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। দেলোয়ারের স্ত্রী সালমা বেগম জানান, আমার স্বামীর সঙ্গে এই ক্ষেতে কাজ করছি। তিনটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি, এখন এই টাকা কিভাবে শোধ দিবেন তা ভেবে কান্না জুড়ে দেন। এদম্পতি এখন মরা গাছ ধরে আহাজারি করছেন। যেন শোকের মাতম চলছে ওই পরিবারে। পড়শিসহ গ্রামের সকল মানুষও একটি মাস সময় দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন, কিন্তু তাঁরা কারো কথা শোনেননি। ফলন ধরা গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, আমি কোনো টাকা পয়সা নেই নি এগুলো সব মিথ্যা। তাঁকে নিষেধ করার পরও সে গাছ লাগাইছে। বাঁধের অনেক ক্ষতি করেছে। ওখানে ঘাষ নষ্ট হওয়ার কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার গাছ উঠাইছে। তিনি কিছু করেননি। উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, ওখানে তরমুজ গাছ লাগিয়েছে আমি আগে দেখিনি যখন দেখলাম, বেড়িবাঁধ রক্ষায় লাগানো ঘাষ কেটে উঠিয়ে ফেলার কারনে কিছু জায়গা রেখে বাকি তরমুজ গাছ আমি উঠিয়ে ফেলেছি। বাঁধের পুনরাকৃতিকরনের কাজ শেষ করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে তারা ডুমুর গাছ লাগিয়েছে। তবে এর সঙ্গে বনবিভাগের কোন লোক সম্পৃক্ত রয়েছেন কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে এই প্রকৌশলী জানান।
×