ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি

প্রকাশিত: ২৩:১১, ১৪ জানুয়ারি ২০২২

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বর্তমানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় যে কোন সময় নতুন উৎস দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সর্বশেষ গত ১৩ নবেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। তবে এক মাস ২৭ দিনের মাথায় গত ৯ জানুয়ারি সিসিইউ থেকে খালেদা জিয়াকে কেবিনে নেয়া হয়। সবমিলিয়ে টানা দুই মাস তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে থেমে থেমে ক্ষুদ্রান্তে রক্তক্ষরণ, রক্তবমি, হিমোগ্লোবিন ওঠা-নামাসহ নানা তীব্র জটিলতায় ভুগছেন। তার ক্ষুদ্রান্তের নিচে রক্তক্ষরণের উৎস বন্ধ করতে ‘ব্যান্ড লাইগেশন’ করা হয়েছে। টানা কয়েকদিন এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেয়া হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) সিসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হয়েছে। এটা ছাড়া আমার কাছে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিষয়ে কোন তথ্য নেই।’ খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এ জে এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সিসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হলেও চিকিৎসকেরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। মেডিক্যাল বোর্ড সার্বক্ষণিক চিন্তিত। যে কোন সময় তার অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। তাকে দ্রুত বিদেশ পাঠালে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব।’ জানা গেছে, গত ১৩ নবেম্বর হাসপাতালে ভর্তির দুদিন আগে অর্থাৎ ১১ নবেম্বর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। তার ওই আবেদন আইনী মতামতের জন্য পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। ২৩ নবেম্বর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। আইনমন্ত্রী জানান, ‘আইন এবং পূর্বে এমন পরিস্থিতিতে নেয়া সিদ্ধান্তের নজির খুঁজছেন তিনি’। ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ‘আইনী উপায়’ খোঁজার কথা বলেছিলেন আইনমন্ত্রী। অবশেষে ২৮ ডিসেম্বর তিনি আইনী মতামত পাঠান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওইদিন বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বরাত দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার একটি চিঠি দিয়েছেন। আমরা দেখেছি এবং আইনমন্ত্রী সেটির ওপর মতামতও দিয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত আমরা পর্যালোচনা করছি। তবে এ বিষয়ে আইনী কোন সুযোগ নেই। দুই মন্ত্রণালয় থেকে ‘না’ করার পর থেকে খালেদা জিয়ার ‘জীবননাশের ষড়যন্ত্র করছে সরকার’-এমন অভিযোগ করছে বিএনপি। আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের হুমকি দিয়ে আসছেন দলটির নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। কেন সরকার তাকে বিদেশে যেতে দিতে চায় না? তারা আইনের কথা বলেন। আইনের মধ্যেই বলা আছে, সরকার চাইলেই তাকে এই মুহূর্তে বিদেশে পাঠাতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বাধা আইন নয়, বাধা হলো এই সরকার। সরকার খালেদা জিয়াকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। খালেদা জিয়ার অনাকাক্সিক্ষত কিছু হলে সরকারের প্রত্যেকেকে আসামি করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় বিএনপি নেতাদের। বিএনপি নেতারাই তাকে নিয়ে রাজনীতি করছে।’
×