ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর ইঙ্গিত

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ খরচ লাখের নিচে নামবে

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ খরচ লাখের নিচে নামবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুল প্রতীক্ষিত মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার খোলার পর এবার কর্মী নিয়োগের খরচ লাখ টাকার নিচে নামতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী কর্মীর আসা-যাওয়ার টিকেটসহ মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ নিয়োগকর্তার। এখানে কর্মীর খরচ বলতে তার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসার খরচ, পাসপোর্ট তৈরি, বিএমইটি ফি, কল্যাণ বোর্ডের সদস্য ফি, মেডিক্যাল ফি এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ। তবে সবচেয়ে বড় সুসংবাদ হচ্ছে- আগামী মাসের মধ্যেই দেশটিতে কর্মী নিয়োগ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। এবার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডাটাবেজের মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানো হবে; যাতে কোন ধরনের সিন্ডিকেট কেউ করতে না পারে। এমন বেশ কিছু শুভ সংবাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। মালয়েশিয়া থেকে ফিরে মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ অফিসে এমন তথ্যই প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন-মালয়েশিয়া প্রান্তে খরচের মধ্যে আছে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় গমনের প্লেন ভাড়া, আবাসন, কর্মে নিয়োগ। কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশী কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইন্স্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টাইন সংক্রান্ত খরচসহ সকল ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করবেন। এক প্রশোœর জবাবে ইমরান আহমদ বলেন-আগে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০-৬৫ যাই থাকুক না কেন-এখন তা থেকে অনেক কমে আসবে। কারণ সেই ব্যয়ের বেশিরভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন। আগে বিমান ভাড়া আমাদের কর্মীরা দিতেন, যার কারণে ওই ব্যয় ছিল। এবার আশা করি, অনেক অনেক কমে যাবে। আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির চার্জ যাই হোক, সেটা আমাদের কর্মীদের ওপর পড়বে। মালয়েশিয়ার অংশেরটা নিয়োগকর্তা দেবেন। সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা নেই। তবে আইডিয়া করা যায় দুই-তিন মাসের বেতনের বেশি হওয়া উচিত না। সংবাদ সম্মেলনে সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন-অভিবাসন আইন অনুযায়ী আমরা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করতে পারি। সেটা করে একটা ধারণা দিতে পারি, খরচ কেমন হতে পারে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে নতুন চুক্তির আলোকে সর্বোচ্চ কত টাকা নিতে পারবে, সেটা নির্ধারণ করব। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে গত রবিবার একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সম্পন্ন হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মালয়েশিয়ার পক্ষে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান চুক্তিতে সই করেন। এই চুক্তির ফলে প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর ফের উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। দেশটির সব সেক্টরে কর্মী নেয়ার অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়ার মন্ত্রিপরিষদ। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশী কর্মী নেবে দেশটি। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার চেষ্টা বারবার ব্যাহত করেছে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। তাদের তৈরি সিন্ডিকেটের অবৈধভাবে এ বাজার দখলের চেষ্টায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এটি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ কমিটির বৈঠকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দেয় দেশটি। তবে আগের চেয়ে এবারের সমঝোতা স্মারকে বেশকিছু বিষয়ে পরিবর্তন আসছে।
×