ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে কিশোরীকে খুনের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে ১২ ঘন্টার মধ্যে চার্জশীট দাখিল

প্রকাশিত: ২০:০৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

গাজীপুরে কিশোরীকে খুনের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে ১২ ঘন্টার মধ্যে চার্জশীট দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক কিশোরী বধূকে খুনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ১২ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ইমনকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। মিথ্যা অপবাদে বিতাড়িত হওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে পুনঃরায় ফিরে যেতে না চাইলে ওই কিশোরী স্ত্রী মারুফা আক্তারকে (১৪) গলাটিপে হত্যা করে তার স্বামী ইমন। সোমবার গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ সানোয়ার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত ইমন (১৯) শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে। কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাছিম জানান, কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের বড়বেড় গ্রামের মাসুদ মিয়ার মেয়ে মারুফা আক্তার (১৪) শ্রীপুরের বরমী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে শ্রীপুরের বরকুল গ্রামের নানার বাড়িতে থেকে ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। মারুফার সঙ্গে ওই গ্রামের ইমনের (১৯) পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় বছর খানেক আগে তারা বিয়ে করে। ইমন কোনো কাজকর্ম না করায় তাদের মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। সম্প্রতি ইমন মাওনা এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, গত কয়েকদিন আগে শ্বশুর বাড়ীতে চুরি করার অপবাদ দিলে মারুফা রাগ করে প্রথমে নানীর বাড়ী এবং পরে বাবার বাড়ী চলে আসে। স্ত্রীকে পুনঃরায় ফিরিয়ে নিতে ইমন শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে তার শশুর বাড়ী বেড়াতে যায়। এসময় মারুফাকে শ্বশুর বাড়ি ফিরে যেতে বললে সে অস্বীকার করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় ইমন। এ ঘটনার পর রাতে বাড়ির সবাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রী মারুফাকে গলা টিপে হত্যা কওে জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় ইমন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মারুফার লাশ খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহতের পরিবার জানায়, মারুফাকে গলা টিপে হত্যার কথা স্বীকার করে পরদিন শনিবার বেলা ১১টায় ঘাতক ইমন নিহতের বাবাকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছে। এসময় সে জানায় স্ত্রী মারুফাকে হত্যার পর সে নিজেও ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে জামাতা ইমনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘাতক স্বামী ইমনকে শ্রীপুরের সাতখামাইর রেল স্টেশন এলাকা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ইমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এ খুনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ১২ ঘন্টার মধ্যে ময়না তদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহ ও রহস্য উদঘাটন এবং মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ।
×