ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়নে সহায়ক হবে : শিল্পমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ২৮ অক্টোবর ২০২১

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়নে সহায়ক হবে : শিল্পমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত শিল্প-পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তিনি বৃহস্পতিবার রাজধানীর আবদুল গণি রোডস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বঙ্গবন্ধুর শিল্প পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে শিল্পায়নের যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল সে-স্বপ্নের সোনালি পথ ধরে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় দেশে বহুমুখী শিল্পায়নের ধারা জোরদার হয়েছে। বেসরকারি খাতে দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রবর্তন করা হলো উল্লেখ করে তিনি বলেন,এই পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্য হচ্ছে, শিল্প উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে স্মরণ করা। এবারই প্রথম এ পুরস্কার প্রদান করা হলেও শিল্প খাতে অবদানের জন্য এখন থেকে প্রতি-বছরই এ পুরস্কার দেয়া হবে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত এ পুরস্কার শিল্প-বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। নূরুল মজিদ মাহমুদ এ সময় উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব জাতিকে অন্ধকারের অমানিশায় আলোর পথ দেখিয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে বৈশ্বিক শিল্পায়ন ও অর্থনীতি যেখানে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে এটি একটি মিরাকল হলেও বাংলাদেশের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত বাস্তবতা। তিনি বলেন,‘কোনো যাদুকাঠির স্পর্শে নয়, বরং এ দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এ দু:সময়ে আমাদের অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হলেও বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপি এবং বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি।’ পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্প উদ্যোক্তাবৃন্দ এবং শিল্প মন্ত্রণালয় ও দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মুজিববর্ষে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০ প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে বাংলাদেশকে শিল্পসমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন। শিল্প সচিব বলেন, বেসরকারিখাতে বিনিয়োগ, শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টিকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। আলোকিত শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, আমদানি-বিকল্প পণ্য উৎপাদন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদন, বাজার ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, শিল্প খাতে বিশেষ অবদান সাপেক্ষে প্রতিবছর বৃহৎ শিল্প, মাঝারি শিল্প ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প, হাইটেক শিল্প, হস্ত ও কারুশিল্প এবং কুটির শিল্পের সাথে জড়িত নির্বাচিত শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রদান করা হবে। বিদ্যমান জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী মোট সাত ক্যাটাগরির শিল্পের প্রতিটিতে তিন জন করে মোট ২১ জন শিল্প উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর (১ জুলাই থেকে ৩০ জুন সময়ের জন্য) এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। এ বছর দু’টি ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে দু’টি করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় মোট ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে, বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের এ অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্তদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১ম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, ২য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং ৩য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেয়া হয়। স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত। এছাড়া, পুরস্কারপ্রাপ্ত সকলকেই সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
×