ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৩ অক্টোবর ২০২১

কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

অনলাইন ডেস্ক ॥ কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে সরকার তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, কৃষিতে এটি সর্ববৃহৎ ব্যয়। সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্ব দিচ্ছে, কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে। আজ শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে 'ভরসার নতুন জানালা' শীর্ষক কৃষি উদ্যোক্তা সম্মেলন-২০২১-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের চ্যালেঞ্জ হলো প্রতিটি পেশাকে লাভবান করা। আমরা এখন দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশে যে জমি আছে, তা পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত কৃষিক্ষেত্র। আমাদের জমি বাড়ানোর সুযোগ নেই, অথচ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রোহিঙ্গারা এসেছে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে পণ্য রফতানি করা হচ্ছে। তাই ফসল যতই ভালো হোক, ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়ানো কষ্টসাধ্য। সে জন্যই হয়তো একটু দাম বেড়েছে। তবে এখন আর মানুষ খাবারের কষ্ট করে না। কৃষি মন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার পর বীণা ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। এই ধানের ফলন যেমন বেশি, তেমনি দুর্যোগ সহিঞ্চু। আর অল্প কিছু গবেষণার পরই কৃষকের জন্য উন্মুক্ত হবে। এখন নতুন ধান কবে ঘরে উঠবে সেজন্য আমাদের আলাদা করে হেমন্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ২৫ বছর আগেও এই সময়ে মানুষ খাদ্যে কষ্ট করতো, তাদের হেমন্তের ধান আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। ২০০৪ সালেও আমি নদীভাঙন এলাকায় মানুষের কষ্ট দেখেছি। অথচ বাংলাদেশ এখন আর সেই বাংলাদেশ নেই। আশ্বিন কার্তিক মাসের কষ্ট এখন আর নেই। সঙ্গে অনেক নতুন সম্ভাবনাও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া কৃষি রফতানিকে অতীতের তুলনায় আরও সহজীকরণ এবং কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে আলাদা একটি সেল গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে আগামী ৪/৫ বছরের মধ্যে দেশে সারাবছর আম পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা ছড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, এটা ছড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। এদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক ও উদার। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের রুখে দিতে হবে। মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়াতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শওকত জামিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল হাকিম, বিসেফ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন সাবেক কৃষি সচিব ও সম্মেলনের সমন্বয়ক আনোয়ার ফারুক। উল্লেখ্য, মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উন্নত ও সমৃদ্ধ কৃষির জন্য 'ভরসার নতুন জানালা' খুলে দেওয়ার অঙ্গীকারে বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড ও স্বেচ্ছাব্রতী নাগরিক সংগঠন বিসেফ ফাউন্ডেশন এবং বিকশিত বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন দেশের কৃষি উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ভরসার নতুন জানালা' শীর্ষক এই কৃষি উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী তিন পর্বে বিভক্ত এ সম্মেলনে ৩৩ জেলা থেকে বিভিন্ন কৃষি উদ্যোক্তারা অংশ নেন।
×