ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২৩ অক্টোবর ২০২১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন অঘটন ঘটানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চলছে। যারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে- তারাই হয়ত এমন অঘটন ঘটাতে পারে। শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে গোলাগুলিতে ৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। এ ঘটনা প্রসঙ্গে সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তবে, এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানেন না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা পুরো বিষয়টা খোঁজখবর নিচ্ছি। কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্রবাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ছোড়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যম্পে ও বাইরে আইনশৃৃঙ্খলা পরিস্থতির উন্নতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এর পরপর এমন ঘটনা সত্যি আতঙ্কের বিষয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে মিয়ানমার সীমান্তে গুলি চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। শুক্রবার সকালে দুইদিনের সফরে সিলেট আসেন পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী। সিলেটে এসে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও জালালাবাদ এ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সিলেট জেলায় জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি মাদরাসায় শুক্রবার ভোরে গুলি করে ও কুপিয়ে ৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা সবাই ওই ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকের ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র বা ভলান্টিয়ার। আরও কয়েকজনকে আহত অবস্থায় ক্যাম্পসংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে গুলি করে হত্যা করা হয় আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অব্যাহত এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি বড় সভা হয়েছে। ড. মোমেন বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে যাতে আইনশৃঙ্খলা আরও উন্নত করা যায়, সে নিয়ে একটা বড় সভা গতকালকেই করেছি। এরপর আজকের দুর্ঘটনা, এটা তো খুবই আতঙ্কের বিষয়। এদিকে, গত মঙ্গলবার ভারত তিস্তা ব্যারাজের গাজলডোবা অংশের সব গেট খুলে দেয়। বাংলাদেশকে কিছু না জানিয়েই গেটগুলো খুলে দেয়ায় আকস্মিক ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দেশের উত্তরাঞ্চল। ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তিস্তার পানি এভাবে হুট করে বাংলাদেশে ছেড়ে দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “আজকে আমাদের স্বরাষ্ট্রসচিব ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলাপ করবেন। একাধিক ইস্যু আছে, সেইসব নিয়ে। পানির বিষয়টি আগে আমাদেরকে জানিয়েছিল কিনা, আমি জানি না। তবে এগুলো একাধিক বিষয় নিয়ে আলাপ হবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সরকারী সম্পর্ক খুবই দৃঢ়। কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশেষের কারণে অনেক সময় ঝামেলা হয়। আমরা এ নিয়ে আলোচনা করব।
×