ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজালালে বসবে বিশ্বসেরা থ্যালাসের রাডার

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ২২ অক্টোবর ২০২১

শাহজালালে বসবে বিশ্বসেরা থ্যালাসের রাডার

আজাদ সুলায়মান ॥ দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রাডার প্রকল্প বাস্তবায়নের চূড়ান্ত ধাপ পেরিয়ে এখন ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অপেক্ষায়। আগামী ডিসেম্বরেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাডার বসানোর শুভ উদ্বোধনের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে সিভিল এভিয়েশন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও ফ্রান্সের রাডার প্রস্তুতকারী কোম্পানি থ্যালাস এলএএসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যে এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছে। মূলত সব জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে রাডার প্রকল্পে এখন ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন হতে যাচ্ছে। এজন্য বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত এই চুক্তি। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোকাম্মেল হোসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ ম্যাঁরির উপস্থিতিতে চুক্তিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমান এবং থ্যালাসের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া প্যাসিফিকের মার্কেটিং প্রধান। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি বলেন, নতুন এ অত্যাধুনিক রাডার স্থাপনের ফলে দেশের সমগ্র আকাশসীমা নজরদারির আওতায় আসবে। এর ফলে বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটে যাতায়াত করা সকল বিদেশী উড়োজাহাজ শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এদের থেকে ফ্লাইং ওভার চার্জ আদায় করা যাবে। নতুন ও অত্যাধুনিক এই রাডার ও এটিসি টাওয়ার স্থাপনের ফলে দেশের আকাশসীমা হবে আরও সুরক্ষিত,বিমান চলাচল হবে আরও নিরাপদ এবং এভিয়েশন খাত হতে বাড়বে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ। তিনি আরও বলেন, আজ আমরা এভিয়েশন খাতের উন্নয়নের একটি বড় পদক্ষেপের সাক্ষী হয়ে থাকছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাডার, এটিসি টাওয়ার স্থাপন ছাড়াও কমিউনিকেশন, নেভিগেশন, সারভেইল্যান্স ও এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। এর দেশে এয়ার নেভিগেশনে বর্তমানে যে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা দূর হবে। দেশের এয়ার নেভিগেশন হবে সময়োপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের। তিনি আারও বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতকে গুরুত্ব দিয়ে এর উন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় দেশের এভিয়েশন খাত বিকশিত হয়ে উন্নীত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বাড়ছে দেশের আকাশ পথে সংযোগের পরিধি। সারাদেশে বিমান পরিবহণ অবকাঠামোর যুগোপযোগী উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি, কারিগরি ও জন দক্ষতা উন্নয়ন এবং নিরাপদ ও সুষ্ঠু বিমান চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের সকল বিমানবন্দরে উন্নয়নের নানাবিধ প্রকল্প ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক থার্ড টার্মিনাল নির্মাণসহ আরও কিছু যুগান্তকারী উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। জানতে চাইলে এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, নিরাপদ বিমান চলাচলের জন্য রাডার ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম প্রধান বিবেচ্য স্থাপনা। এভিয়েশন জগত যতটা এগোচ্ছে রাডার ও ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেমও ততই আধুনিক হচ্ছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সিভিল এভিয়েশনও হাতে নিয়েছে বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত এ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সমুদ্রসীমার ওপর দিয়ে চলাচলকারী অনেক বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ এর আওতায় আসবে। এতে শুধু রাডার ব্যবস্থাপনার কারণেই বেড়ে যাবে সিভিল এভিয়েশনের রাজস্ব। সেইসঙ্গে নিশ্চিত হবে নিরাপদ আকাশপথ।
×