ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

অবিরাম বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় আমন ও সবজীর ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ১৮:৫০, ২০ অক্টোবর ২০২১

অবিরাম বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় আমন ও সবজীর ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁও ও তার আশপাশের এলাকায় গত তিনদিন থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় এলাকার শত শত বিঘা জমির আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় আমনচাষীদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আগাম শীতকালীন সবজি ও আলুচাষীরা। তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলে ফসলের মাঠে পানি বেশি দিন জমে থাকতে পারবে না। তাই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম। গত সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও জেলার শতাধিক হেক্টর জমির আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে এসব ধান কেটে ঘরে তুলতেন কৃষকেরা। এখন বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। অপরদিকে আগাম সবজি ও আলু চাষীদের মাথাঁয় হাত পড়েছে। বর্তমানে বাজারে আলুর দাম নেই, আগাম আলু করে লাভ করার আশায় এখন ক্ষতির মুখে কৃষক। বুধবার সদর উপজেলার শীবগঞ্জ, জগন্নাথপুর, নারগুনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুড়ে দেখা যায়, আধা-পাকা ধানের গাছ ও সবজিক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। মাটিতে নুয়ে পড়া ধানগাছ গোছা বেঁধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন অনেক কৃষক। অনেকে আবার সবজি ও আলু ক্ষেতের পানি ড্রেন করে বের করতে ব্যস্ত। সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ এলাকার কৃষক আলী আসলাম বলেন, আর মাত্র ১০-১৫ দিন পরই ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করবে। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ৭০-৮০ শতাংশ জমির আমন ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। এই ধান এখন কি হবে, কিভাবে এই ক্ষতি পুরণ হবে ভেবে পাচ্ছি না। ওই এলাকার আরেক কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে আগাম ব্রি সুমন স্বর্ণা জাতের ধান লাগিয়েছিলাম। মাঠে ধান পেকে গেছে। দু-এক দিন পর ঘরে তুলব। অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান নুয়ে পড়েছে। এতে ধান তুলতে পারলেও গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।’ এতে তার লোকসান হবে ১৫-২০ হাজার টাকার মতো। বেগুনবাড়ি এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, আগাম সবজি ও আলু করেছি লাভের আশায়। কিন্তু এই বৃষ্টি সব শেষ করে দিল। আলু ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। আলু যেগুলো লাগানো হয়েছে আর বৃষ্টি হলে সব আলু পচেঁ যাবে। সবজি ক্ষেতেও বিজগুলো পানিতে পচেঁ যাওয়া শুরু করছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেসব জমির ধানে সবেমাত্র শিষ এসেছে বা বের হয়নি, ওই জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি আলুক্ষেতে পানি জমে থাকায় চাষীরা কিছুটা ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে বলে কৃষি অফিস জানায়। দিনাজপুর অঞ্চল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ আলম কৃষকের মাঠ পর্যবেক্ষণ করতে এসে জানান, মাঠ পর্যবেক্ষন করে আমরা দেখলাম প্রায় ৬হাজার হেক্টর জমির ধান, সবজি ও আলুর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নামের তালিকা করা শুরু হয়েছে। ক্ষতি পুরণ দেওয়ার জন্য আলোচনা করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
×