ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

এ বছর আন্দোলনে যাচ্ছে না বিএনপি

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

এ বছর আন্দোলনে যাচ্ছে না বিএনপি

শরীফুল ইসলাম ॥ এ বছর রাজপথের আন্দোলনে যাচ্ছে না বিএনপি। তবে নতুন বছরের শুরুতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন প্রক্রিয়া শুরুর পর সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন শুরু করে সরকারকে চাপে ফেলার চিন্তা করছে দলীয় হাইকমান্ড। এ জন্য আগেভাগেই কর্মকৌশল ঠিক করতে দলের নেতাদের সঙ্গে ৬ দিনব্যাপী বৈঠক করা হয়েছে। এ ছাড়াও সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পেশাজীবী সংগঠন ও বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পর সকল প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ভবিষ্যত করণীয় চূড়ান্ত করবে বিএনপি। সূত্র জানায়, দলের নেতাদের সঙ্গে ৬ দিনব্যাপী বৈঠকে অর্ধশতাধিক প্রস্তাব এসেছে। সবগুলো প্রস্তাব লিখে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তীতে অন্যান্য বৈঠকেও যেসব প্রস্তাব ওঠে আসবে সেগুলোও লিখে রাখা হবে। এরপর এসব প্রস্তাব নিয়ে সিনিয়র নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করে পর্যালোচনা করবেন। তারপর সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মকৌশল চূড়ান্ত করে মাঠে নামবে বিএনপি। বিভিন্ন স্তরের বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, তাদের সামনে এখন প্রধান লক্ষ্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে এ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের দাবি কিভাবে আদায় করা যায় সে টার্গেট নিয়েই এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। আর এ টার্গেটে পৌঁছতে হলে রাজপথের আন্দোলন ছাড়া হবে না বলে তারা মনে করছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে, রাজপথে আন্দোলন করে সংবিধান সংশোধন করা যাবে না অর্থাৎ নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যাবে না- এমনটি মাথায় রেখেই তারা আন্দোলনসহ সার্বিক বিষয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করছে। তাই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ৬ দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকে রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচী পালনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ২ শতাধিক নেতা প্রস্তাব দিলেও এখনই এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না দলীয় হাইকমান্ড। আন্দোলন শুরুর আগে বিদেশী কূটনীতিকসহ বিভিন্ন মহলের সহযোগিতা নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারকে কিভাবে মোটামুটি নিরপেক্ষ রাখা যায় সে চেষ্টা করা হবে। তবে এ চেষ্টা বিফল হলেও যাতে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হয় সেদিকে দৃষ্টি রেখে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে আগামী বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেবেন। এ বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছর জানুয়ারির শুরুতে এ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তাতে আগের ২ বারের মতো এবারও সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তাই নতুন বছরের শুরুতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরুর পরই বিএনপি রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচী শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এ আন্দোলনে যাতে সমমনা রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সমর্থন পাওয়া যায় তা নিয়েই এখন চলছে আগাম প্রস্তুতি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার সাড়ে ৩ বছর পর ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম দফায় ৩ দিন এবং ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় আরও ৩ দিন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে বিএনপি হাইকমান্ড। প্রতিদিনের বৈঠকেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, জাতীয় কাউন্সিল, সর্বস্তরে দল পুনর্গঠন, গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি, আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসহ তাদের মতামত দেন। ৬ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ৪৯১ জন নেতার মধ্যে প্রায় ২ শতাধিক নেতা বক্তব্য রাখেন।
×