ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ই-অরেঞ্জের সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

ই-অরেঞ্জের সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা

শংকর কুমার দে ॥ প্রতারণার ফাঁদ পরিচিত ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের কথিত পৃষ্ঠপোষক, ভারতে আটক বনানী থানার পরিদর্শক (বরখাস্ত) সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার। শীঘ্রই সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি অনেকটাই অনিশ্চিত। তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পুলিশের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে হতাশা। কারণ, ঢাকার পুলিশ তিন দফায় চিঠি দিয়েছে দিল্লীর পুলিশকে। কিন্তু দিল্লীর পুলিশের পক্ষ থেকে কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছে না, সাড়া নেই। শেষ পর্যন্ত কূটনৈতিক চ্যানেলে তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চেষ্টা করবে ঢাকা, এমনটাই পুলিশ সদর দফতরের দাবি। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, দিল্লীর ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোকে (এনসিবি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। দিল্লী পুলিশের কাছে তিন দফা চিঠি দিয়ে সোহেল রানাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকার পুলিশ। কিন্তু চিঠির কোন জবাব পাওয়া যায়নি। এ কারণে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। তবে আইনী প্রক্রিয়ায় কোন জটিলতা দেখা দিলে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দেয়া হবে। ক‚টনৈতিক প্রক্রিয়ায় হলেও সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চেষ্টা করছে সরকার। সোহেল রানাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর বিষয়ে সরকার খুবই আন্তরিক বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ই-অরেঞ্জ কাণ্ডে বিতর্কিত বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে দ্বিতীয় দফা চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। গত ৫ সেপ্টেম্বর সোহেল রানার বিষয়ে নয়াদিল্লীর এনসিবিকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। ঢাকার চিঠির জবাব দেয়নি দিল্লীর পুলিশ। সম্ভবত দিল্লীর পুলিশ ই-অরেঞ্জ কাণ্ডসহ সোহেল রানার বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। রিমাইন্ডার হিসেবে দ্বিতীয় চিঠি দেয়া হয়েছে গত ৭ সেপ্টেম্বর। এরপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ দিল্লী পুলিশের কাছে চিঠি ঢাকার পুলিশ। চিঠিতে সোহেল রানার মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর কথা বলা হয়েছে, পাশাপাশি তাকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা ও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। কিন্তু দিল্লীর পুলিশের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মহিউল ইসলাম বলেছেন, আমরা ইন্টারপোল ডিপার্টমেন্ট মূলত বিভিন্ন দেশে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে ওয়ান্টেড আসামিদের নামে রেড এ্যালার্ট জারি করি। আমাদের মাধ্যমে আসামি ফিরিয়ে আনা খুবই জটিল প্রক্রিয়া। ভারতের সাথে যেহেতু বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি আছে, তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা খুব সহজেই করতে পারবে। বলা যায়, আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাব। বাকিটা মন্ত্রণালয় দেখবে। আমরা ভারত থেকে মামলার বিস্তারিত ও দিকনির্দেশনা পেলে তা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেব। সোহেল রানার বিরুদ্ধে রেড এ্যালার্ট জারি করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মহিউল বলেন, এটা ভারতের এনসিবি আমাদের জানাবে। সোহেলকে ফিরিয়ে দিতে তাদের যদি রেড এ্যালার্ট প্রয়োজন পড়ে, তাহলে আমরা তা জারি করব। তবে বন্দী বিনিময় চুক্তির কারণে সম্ভবত রেড এ্যালার্ট জারির প্রয়োজন পড়বে না।
×