ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিশু ফাতেমার চোখে-মুখে সেই রাতের ভয় এখনো কাটেনি

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

শিশু ফাতেমার চোখে-মুখে সেই রাতের ভয় এখনো কাটেনি

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ ॥ স্বজনদের সান্তনাতেও থামছে না তিন বছরের শিশু ফাতেমার আকুতি। চোখের সামনেই সে দেখেছে মায়ের উপর নির্যাতনের সেই ঘটনা। শনিবার রাতে নান্দাইল উপজেলার নির্জন হাওড়ে তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তখন ফাতেমা মায়ের কোলে ছিল। পরে তার কান্নার শব্দে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে দেখতে পান রক্তাত্ব মায়ের নিথর দেহের ওপর শিশুটি কাদছে। তখন ফাতেমার শরীরে ও জামায় মায়ের রক্ত লেগে ছিল। এই ঘটনার পর তাকে নানার বাড়িতে রাখা হয়েছে। এখন সে অচেনা মানুষ দেখলেই চিৎকার করে। থেমে থেমে কান্না করে মায়ের জন্য। তার চোখে-মুখে এখনো সেই ভয়াবহ রাতের ভয় কাটেনি। জানা গেছে, শিশু ফাতেমার মা ইয়াসমিন আক্তারের (৩৫) সঙ্গে ১০ বছর আগে শ্রীরামপুর গ্রামের হাদিস মিয়ার পুত্র সাদ্দাম হোসেনের (৪০) বিয়ে হয়। ওই দম্পতির রয়েছে দুটি সন্তান। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। ইয়াসমিনকে প্রায় সময় স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে হত। এ নিয়ে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু ১০/১২ দিন পূর্বে দুই পরিবারের লোকজন সেই বিরোধ মিটিয়ে ইয়াসমিনকে বাবার বাড়ি কেন্দুয়া থেকে স্বামীর বাড়িতে ফেরত পাঠায়। শনিবার সন্ধ্যায় ইয়াসমিন তার শিশু কন্যা ফাতেমাকে নিয়ে বাবার বাড়ি রওনা হয়। পথে যোগের হাওড়ের পাশে ফাতেমার চোখের সামনে তার মা ইয়াসমিনকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে খুন করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী সাদ্দাম পলাতক রয়েছে। ইয়াসমিনের স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ সাদ্দামই এই খুনের সাথে জড়িত। ফাতেমার স্বজনরা জানায়, মায়ের মৃত্যু নিজ চোখে দেখেছে সে। রাতে ঘুমের ঘরেও সে কেঁদে উঠে। আগের মত খাওয়া দাওয়া করে না। চোখে একটা অজানা ভয় কাজ করে। নান্দাইল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি উবায়দুর রহমান বলেন, এই ঘটনায় নিহতের ভাই বকুল মিয়া বাদি হয়ে স্বামী সাদ্দামকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছে। এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
×