ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘমেয়াদী কোভিড করণীয়

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

দীর্ঘমেয়াদী কোভিড করণীয়

অনলাইন রিপোর্টার ॥ কোভিড-১৯ হলো SARS-COV-2 ভাইরাস বা Corona ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রোগ যা সাধারণত শরীরের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ ও সংক্রমণ সৃষ্টি করা একটি রোগ। প্রাথমিকভাবে কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ শরীরে ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত চলমান থাকে। কিন্তু অনেক সময় এর দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি যা ১২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শরীরের যেকোনো সিস্টেম বা তন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। যাকে লং বা দীর্ঘমেয়াদী কোভিড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই লং বা দীর্ঘমেয়াদী কোভিড প্রথমত সংজ্ঞায়িত করেছেন ন্যশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড এক্সিলেন্স (NICE) ও অন্যান্য সংস্থা যা কোভিডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংক্রমণের সময় বা তার পরে বিকাশকারী লক্ষণ এবং উপসর্গের উপস্থিতি হিসেবে। লং কোভিডের লক্ষণ ও উপসর্গে সাধারণত ক্লাস্টার বা গুচ্ছ আকারে প্রায়শই ওভারলেপিং হয়, যা সময়ের সাথে সাথে ওঠানামা করতে পারে ও পরিবর্তিত হতে পারে এবং শরীরের যেকোনো সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে যেমন- শ্বাসতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র, পরিপাক তন্ত্র, হাড় ও মাংসপেশি ইত্যাদি। লং কোভিডের সবচেয়ে সাধারণ ও বেশ লক্ষণীয় উপসর্গ হচ্ছে সামান্য পরিশ্রমের পর ক্লান্তি, অল্পতে শ্বাসকষ্ট, ভুলে যাওয়া, ইত্যাদি। অধিকন্তু পুরুষদের থেকে ৫০ ঊর্ধ্ব মহিলাদের বেশি লং কোভিডে ভুগতে দেখা যায়। তবে প্রাথমিক কিছু রিপোর্টে জানা যায় যে অল্প ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যেও এর প্রভাব কিছুটা পরিলক্ষিত। লং কোভিডে বিশেষ করে অনেকদিন ধরে হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা বা ICU তে থাকা রোগীরই বেশি ভুগতে দেখা যায়। যাদের সংক্রমণের ভাইরাল লোড বেশি ও অন্যান্য co-morbidities থাকে, তারাও এ রোগে বেশি কষ্ট পেয়ে থাকে। লং কোভিডের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা বলতে অন্যান্য কোভিড রোগীদের মতো লক্ষণ ও উপসর্গের যথাযথ ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে ধরে রাখা। কিন্তু ফিজিওথেরাপির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার কিছু সতর্ক নির্দেশিকা বা মডেল প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে গ্রেডেড ব্যায়াম থেরাপি (জিইটি) ব্যবহারের ক্ষেত্রে। তাই ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সব রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসক ও প্রফেশনাল ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে, বিশেষ করে যেসব হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট এ সকল লং কোভিডের রোগী বেশি বেশি দেখে থাকেন ও চিকিৎসা দিয়ে থাকেন, সেসব সেন্টারের সহায়তায় ফিজিওথেরাপি ও অন্যান্য পুনর্বাসন চালিয়ে যাওয়া উচিত। যদিও এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ও ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে, তাই রোগীদের অবশ্যই অন্যান্য রোগের ওষুধ ও চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া ও নিয়ম মেনে চলা অতিব জরুরী। লেখক: ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরাফ, কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট-- ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা সূত্র: ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরাফ
×