ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পেঁয়াজের আমদানি মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ১৮ জুন ২০২১

পেঁয়াজের আমদানি মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোরবানি সামনে রেখে পেঁয়াজের আমদানি মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভারত থেকে পুরোদমে আমদানি শুরু হওয়ায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় ২০ টাকা পর্যন্ত। এর আগে জুনের শুরুতে একলাফে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে। বর্তমান খুচরা বাজারে আমদানিকৃত প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ এবং দেশী জাতেরটি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানি সামনে রেখে নিত্যপণ্যের পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র। সূত্রমতে, কোরবানি সামনে রেখে ইতোমধ্যে পেঁয়াজের আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধে এবার আগে-ভাগে প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। বিশেষ করে ব্যবসায়ী পর্যায়ে আমদানি ও মজুদ বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। কোরবানি সামনে রেখে এসব পেঁয়াজ ট্রাকসেলে বিক্রি করা হতে পারে। তবে বাজারে যদি দাম স্বাভাবিক থাকে সেক্ষেত্রে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম চালু করবে না। জানা গেছে, কোরবানির সময় দেশে অতিরিক্ত তিন থেকে সাড়ে ৩ লাখ টনের পেঁয়াজের চাহিদা তৈরি হয়। এবার দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের ভাল দাম নিশ্চিত করতে গত ২৯ এপ্রিল থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু কোরবানি সামনে রেখে দাম বেড়ে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ মজুদ কমে আসার কারণে আবার আমদানি অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর ফলে ভারত থেকে এখন প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে আনা হচ্ছে। এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, কোরবানি সামনে রেখে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এখন যে কেউ সরকারের অনুমতি নিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারছেন। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। দামও কমে আসছে। এবার কোরবানিতে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা। জানা গেছে, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। চাওয়া মাত্র ব্যবসায়ীরা ইম্পোর্ট পারমিট (আইপি) পাওয়ায় ভারত থেকে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আনার সুযোগ পাচ্ছেন। আগামী কোরবানি ঈদের আগ পর্যন্ত ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আমদানিকারকরা। ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এবং পুরান ঢাকার পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, ফের অনুমতি পত্র দেয়ায় অনেকে এখন পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সামনে কোরবানি ঈদ, ওই সময় বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়বে। এর আগে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র সমুদ্র বন্দর, চট্টগ্রামের উপপরিচালক নাসির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, দেশীয় পেঁয়াজের কথা বিবেচনায় নিয়ে (মার্চ-এপ্রিল) চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে কোন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। তবে এর আগে আসা কিছু পেঁয়াজের নিলাম হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও টিসিবির তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪-২৬ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় দেশীয় উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় প্রতিবছর ৯-১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। দামে সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে আমদানিকৃত পেঁয়াজের সিংহভাগ আনা হয় ভারত থেকে।
×