ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বামী গুরুতর আহত

সিলেটে দুই সন্তান ও মাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ১৭ জুন ২০২১

সিলেটে দুই সন্তান ও মাকে কুপিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ গোয়াইনঘাটের বিন্নাকান্দি এলাকায় দুই সন্তানসহ মাকে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আলিমা বেগম (৩০), তার দুই সন্তান মিজান (১০) ও তানিশাকে (৩) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আলিমা বেগমের স্বামী হিফজুর রহমান। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, হিফজুর রহমানের নিজের কোন সম্পদ নেই। একেবারেই হতদরিদ্র। থাকেন মামার বাড়িতে। মায়ের তরফ থেকে পাওয়া জমিতে মাটির একটা ঘর করেছেন। সেখানেই স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন হিফজুর। মঙ্গলবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে হিফুজরের স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করে। কোপানোর কারণে আহত হন হিফুজর। তিনজনকে হত্যার ঘটনায় সিলেটে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মদ ও পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা জমিসংক্রান্ত বিরোধের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আহত হিফজুর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হামলাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে পুলিশ। হিফজুরদের প্রতিবেশী, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, হিফজুর তার মামার বাড়িতে ঘর বানিয়ে থাকেন। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী গ্রামে। হিফজুরের কোন শত্রæ আছে বলে আমার জানা নেই। কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা বুঝতে পারছি না। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। গোয়ানঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আহাদ বলেন, দুর্বৃত্তরা হিফজুরদের ঘরে ঢুকে তাদের বঁটি দা দিয়েই সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। রক্তমাখা সেই বঁটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা অনেক মোটিভ নিয়ে কাজ করছি। তবে এটি ডাকাতির কোন ঘটনা নয়। হিফজুররা একেবারেই দরিদ্র। তাছাড়া ঘরের কোন জিনিসপত্র খোয়াও যায়নি। পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, কী কারণে হত্যা করা হয়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে জমিসংক্রান্ত কোন বিরোধ রয়েছে কী না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য বিষয়গুলোও আমরা খতিয়ে দেখব। আহত হিফজুরের সঙ্গে কথা বললেও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। স্থানীয় লোকজন জানান, বুধবার সকালে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুম থেকে উঠছিলেন না হিফজুরের পরিবারের সদস্যরা। দেরি দেখে প্রতিবেশীরা হিফজুরের ঘরের সামনে যান। এ সময় ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে দরজায় ধাক্কা দেন তারা। প্রতিবেশীরা জানান, দরজার সিটকিনি খোলাই ছিল। ভেতরে প্রবেশ করে খাটের মধ্যে তিন জনের জবাই করা মরদেহ ও হিফজুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। পরে পুলিশে খবর দিলে গোয়াইনঘাট থানার এসআই মহসিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করেন এবং হিফজুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হিফজুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দায়ের কোপ রয়েছে। নিহত আলিমা বেগমের পিতা আইয়ুব আলী জানান কিছুদিন পূর্বে তার মেয়ে তাকে বলেছিল পার্শ¦বর্তী বাসিন্দারা তাদের জমিজমা নিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন। এ নিয়ে বিচার সালিশও হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে বলে তার ধারণা।
×