ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

‘প্রকৃত আলেম’ নয়, অপরাধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ॥ ধর্মপ্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ১৫ জুন ২০২১

‘প্রকৃত আলেম’ নয়, অপরাধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ॥ ধর্মপ্রতিমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সাম্প্রতিক নাশকতার ঘটনায় ‘প্রকৃত কোনো আলেম বা বুজুর্গ’ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়নি মন্তব্য করে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, ফৌজদারী অপরাধে অপরাধী ‘আলেম নামধারী ক্ষমতালিপ্সু ও ষড়যন্ত্রকারীদেরই’ আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিলের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর সংসদ সদস্যদের দেওয়া বক্তব্যের জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও রুমিন ফারহানা সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ টেনে এর সমালোচনা করেন। জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো পর্যায়ে কোনো বুজুর্গ ব্যক্তি ও প্রকৃত আলেম গ্রেফতার বা মামলার আওতায় আসেননি। কেবলমাত্র আলেম নামধারী কিছু অর্থ ও ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি, যারা বিভিন্ন ফৌজদারী অপরাধে জড়িত; যারা ধর্মের নামে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক কাজে জড়িত, তারাই আইনের আওতায় এসেছে। যদি অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হোক। এবং ইতোমধ্যে বহু আলেমকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যারা দোষী ব্যক্তি, তাদের বিরুদ্ধেই এ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিএনপির হারুনুর রশিদ বলেন, দেশের শীর্ষ ৫৬ জন আলেমের বিরেুদ্ধে‌ দুদক নোটিস দিয়েছে। আমি মনে করি আলেমদের আগে আমাদের সাড়ে তিনশ এমপির বিরুদ্ধে দুদক নোটিশ দিলে তা সমাদৃত হত। নারী উন্নয়ন নীতি ও শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করে ২০১০ সালে গড়ে উঠেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তবে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ আন্দোলনের পাল্টায় আট বছর আগে রাজপথে নেমে সংগঠনটি বেশি পরিচিতি পায়। শাহবাগের আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডেকে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় সংগঠনটি। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের মতিঝিল থেকে সরাতে হয়। ওই ঘটনায় কেবল ঢাকাতেই ৫৩টি মামলা হয়েছিল সে সময়। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন থানায় হয়েছিল আরও অন্তত ৩০টি মামলা। বেশ কয়েক বছর নিষ্ক্রিয় থাকা হেফাজতের নেতারা গত বছরের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় সরব হতে থাকে। এরপর গত মার্চ মাসের শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় কর্মসূচি নিয়ে নামে রাজপথে। তাদের বিক্ষোভ ও হরতালের কর্মসূচি থেকে কয়েকদিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামে সংঘাত-সহিংসতায় ডজন খানেক প্রাণহানি ঘটে। হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, পুলিশ ফাঁড়ি, রেল স্টেশন ভাংচুর ও আগুন ধরানো হয়। এবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ১৫১টি মামলা হয়েছে, তাতে ৩ হাজার ২৪৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
×