ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১০ মাসে ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি গ্যাস বিদ্যুতসহ ইউটিলিটির ব্যাপক উন্নতি

করোনায় বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে

প্রকাশিত: ২২:৩২, ১২ জুন ২০২১

করোনায় বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে

রহিম শেখ ॥ মহামারী করোনার মাঝেও নিট বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই বিনিয়োগের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২.১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কয়েকটি খাতে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিছু খাতে বাড়ানো হয়েছে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ। এছাড়া শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির শুল্ক কমানো হয়েছে। কিছু খাতে কমানো হয়েছে আগাম কর। একইসঙ্গে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে বন্দর, সড়ক ব্যবস্থার যোগাযোগ উন্নয়ন করা হয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুতসহ ইউলিটি ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে। বিনিয়োগের গতি বাড়াতে ওয়ানস্টপ সার্ভিস দিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত ব্যালেন্স অব পেমেন্ট (বিওপি) সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই বিনিয়োগর পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২.১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার। বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো লভ্যাংশ বাবদ যে অর্থ নিয়ে যায়, মোট বিদেশী বিনিয়োগ থেকে তা বাদ দিলে নিট বিনিয়োগ পাওয়া যায়। জুলাই-এপ্রিল সময়ে মোট (গ্রস) বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৯৯৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৮৫ শতাংশ বেশি। গত ১০ মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৯ শতাংশ বেড়ে ১৯৩ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। একই সময়ে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এর প্রভাবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ বিলিয়ন ডলার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.২২ বিলিয়ন ডলারে। যার প্রভাবে জুলাই-মার্চ সময়ে উদ্বৃত্ত থাকা কারেন্ট এ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স জুলাই-এপ্রিলে এসে ৪৭ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যদিও গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে কারেন্ট এ্যাকাউন্ট ব্যালেন্সের এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩.৭৭ বিলিয়ন ডলার। জুলাই-এপ্রিল সময়ের আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চাল আমদানিতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বেড়েছে। এরপরই আছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, মরিচ, সয়াবিন, ডাল, ওষুধ তৈরি উপকরণ, রাসায়নিক ক্লিংকার ইত্যাদি আমদানির ব্যয়। নিট বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, মিয়ানমারে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বাংলাদেশের চেয়ে ৫ গুণ বেশি। দেশটিতে সামারিক শাসন শুরু হওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে দেশটি থেকে কিছু বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে এসে থাকতে পারে। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনা মোকাবেলা করে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণে আমদানি বাড়ছে বিষয়টি তা নয়। বরং বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। তিনি জানান, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ও সয়াবিনের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। যার প্রভাবে আমদানির ব্যয়ও বেশি দেখাচ্ছে। জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপী নতুন বিনিয়োগ কমেছে। তবে চীন, জাপান ও ইউরোপের অনেক বিনিয়োগ স্থানান্তরিত হয়েছে এ সময়ে। উচ্চ করহার, দুর্বল অবকাঠামো, সঠিক ব্যবসায় পরিবেশ না থাকা এবং উদ্যোক্তাদের ইনসেনটিভ দিতে না পারায় ২০২০ সালে কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ পায়নি বাংলাদেশ। বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা বৈশ্বিক বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে। এতে দেখা যায়, বর্তমানে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস দেশের ১৯০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৮টি। ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বার্ডেন অব গবর্নমেন্ট রেগুলেশন সূচকে ৬৯, এফিশিয়েন্সি অব লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক সূচকে ৮৪ এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড গবার্ন্যান্স ইন্ডিকেটরস এ বাংলাদেশ মাইনাস ০.৮২ পয়েন্ট। এসব সূচক বিদেশী বিনিয়োগ না আসার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে কর্পোরেট কর হার ৩৫ শতাংশ। ভারতে কর্পোরেট কর হার ৩০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৮ শতাংশ। আফগানিস্তানে ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ২০ শতাংশ। এ ছাড়া মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়ায় ২৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২৪ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ১৭ শতাংশ কর্পোরেট কর বিদ্যমান রয়েছে। তবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট কর ৩০ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ এবং একক ব্যক্তি কোম্পানির কর হার সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে কয়েকটি খাতে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিছু খাতে বাড়ানো হয়েছে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ। এছাড়া শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির শুল্ক কমানো হয়েছে। কিছু খাতে কমানো হয়েছে আগাম কর। মূলত গত কয়েকবছর ধরে অটোমোবাইল শিল্প নিয়ে নীতি প্রণয়নে সেভাবে মনোযোগ ছিল না সরকারের। এবার ঠিক তার বিপরীতটাই হয়েছে। অটোমোবাইল-থ্রি হুইলার ও ফোর-হুইলার উৎপাদনকারী কোম্পানিকে শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছর মেয়াদে কর অব্যাহতি এবং আরও কিছু শর্ত সাপেক্ষে আরও ১০ বছরের কর অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। মোটরগাড়ি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই শিল্পের জন্য এটা বড় পাওয়া। অর্থাৎ গাড়ি উৎপাদনে ২০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে। ভারি শিল্প খাতে করভার নিয়ে করোনার সময় অস্বস্তি ছিল। বাজেটে কর ভার কিছুটা হলেও কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, এটা করোনার এই সময়ে স্বস্তি দেবে। বাজেটে অটোমোবাইল-থ্রি হুইলার এবং ফোর হুইলার উৎপাদনকারী কোম্পানিকে শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছর মেয়াদে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন কিছু শর্ত সাপেক্ষে আরও ১০ বছর কর অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। বেশকিছু হোম এ্যাপ্লায়েন্সেস ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সেস পণ্য এবং হাল্কা প্রকৌশল শিল্পের পণ্যের উৎপাদনকারী কোম্পানিকেও শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছর মেয়াদী কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে। এই দশ বছরের কর অব্যাহতির সুবিধা নেয়ার জন্য দেশে শত শত শিল্প-কারখানা গড়ে উঠতে পারে। এতে বিপুল পরিমাণে বিদেশী বিনিয়োগ আশা করছে সরকার। পাশাপাশি ১৬শ’ সিসি পর্যন্ত গাড়ি উৎপাদনে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে যন্ত্রাংশ আমদানিতে আগাম কর দিতে হয়। আগামী বাজেটে সেটিও বাতিল করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সম্প্রতি ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার আমরা অনেক ইনসেনটিভ দিয়েছি। বিডা একগুচ্ছ সুযোগ অপরচুনিটি দিয়েছে বিদেশী কোম্পানিগুলোকে। বন্দর, সড়ক ব্যবস্থার যোগাযোগ উন্নয়ন করা হয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুতসহ ইউলিটি ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে। তবে ভারতের কনজুমার মার্কেট বড় হওয়ায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আমাদের চেয়ে তাদের প্রায়োরিটি দিচ্ছে।’ সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিনিয়োগ নিয়ে একটি বড় অভিযোগ ছিল আমলাতান্ত্রিক সমস্যা। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। পরিস্থিতি খুব দ্রুতই উন্নতি ঘটেছে। ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করেছি। ইনসেনটিভের ক্ষেত্রে দেশি কোম্পানিকে বেশি দেয়া হচ্ছে না। সবাইকে সমানভাবে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।’ সুকুক বন্ড দিয়ে অর্থ সংগ্রহে বড় ছাড় ॥ ইসলামি বন্ড ও সুকুকের বাজার বড় করতে চায় সরকার। এজন্য কর ছাড় দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এর ফলে যে সম্পদের বিপরীতে সুকুক ছাড়া হবে, তা ট্রাস্টির কাছে হস্তান্তরে কোন মূলধনী কর দিতে হবে না। অর্থাৎ সম্পত্তি হস্তান্তরে কোন কর দিতে হবে না। বর্তমানে সরকার সুকুকের মাধ্যমে বাজার থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা তুলছে। আবার সুকুকের মাধ্যমে বেক্সিমকো গ্রুপও কয়েক হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদী পুঁজি সংগ্রহে ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে সরকার শক্তিশালী বন্ড মার্কেট বিকাশে নীতি সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নীতির অংশ হিসেবে সুকুক বা ইসলামি বন্ডের সহজ প্রচলন ও বাজার শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় প্রযোজ্য মূলধনী কর পরিশোধ হতে অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাব করছি।’ এই প্রস্তাব সংসদে পাস হলে দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজি সংগ্রহ সহজ হবে এবং ব্যাংক নির্ভরতা কমে আসবে। একইসঙ্গে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে, যা অবকাঠামো ও পুঁজিঘন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, কোন সম্পদের বিপরীতে সুকুক ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করতে হলে ওই সম্পদ কোন ট্রাস্টির হেফাজতে রাখতে হয়। আবার পরে সেগুলো ট্রাস্টির কাছ থেকে মূল কোম্পানিতে স্থানান্তর করা যায়। সম্পদ হস্তান্তরের সময় যে মূলধনী কর পরিশোধ করতে হয়, সেটি তুলে নেয়া হচ্ছে। এর ফলে সুকুকের বাজার বড় হবে, খরচ কমবে বলে সুকুকের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহে উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হবেন। নতুন সম্ভাবনা স্টার্টআপ ॥ দেশে প্রতিবছর যাত্রা শুরু করে ২০০-টিরও বেশি স্টার্টআপ। বর্তমানে ১২ শতাধিক দেশীয় উদ্যোগের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভাবনাময় এ খাতে প্রায় ২৪৭ মিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। তবে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় দেশের স্টার্টআপে কমছে বিদেশী বিনিয়োগ। ২০১৭ সালে দেশীয় স্টার্টআপে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭ মিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে যা ১০৩ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। ২০১৯ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ৯১ ও ৩৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পায় দেশীয় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশের স্টার্টআপে ২০২১ সালে এ পর্যন্ত ৩১ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। করোনার মধ্যেও ২০২১ সালে দেশের ৫০টি স্টার্টআপে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া অবস্থান, গ্লোবাল ব্র্যান্ডিং না করাকেই দেখছেন অনেকেই। জানতে চাইলে সহজ ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা মালিহা কাদের বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভ্যালু অনেক কম। ইনভেস্টররা বাংলাদেশের কথা শুনলে মনে করে এই দেশ অনেক গরিব কিংবা দুর্যোগকবলিত দেশ। এই অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণ করতে হবে। প্রয়োজনে গ্লোবাল পি আর এজেন্সি হায়ার করে বিদেশী গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করতে হবে। আমরা গরিব দেশ নই, উন্নয়নশীল ও বিনিয়োগবান্ধব এটা সবাইকে বোঝাতে হবে। বিনিয়োগ সেবা এক ছাদে ॥ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সকল ধরনের সেবা অনলাইনে প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। সেই প্রেক্ষিতে বিডা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অনলাইন ভিত্তিক ওয়ানস্টপ সার্ভিস পোর্টালের কার্যক্রম চালু করে। বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এর কারিগরি সহায়তা ও যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) সহযোগিতায় ২০২১ সালের মধ্যে আলোচ্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে বিডা ৩৫টি সেবা প্রদানকারী সংস্থার ১৫৪টিরও বেশি বিনিয়োগ সেবা প্রদান করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে বিডা ১৬টি সংস্থার মাধ্যমে ৪৭টি সেবা দিয়ে আসছে। এছাড়া অধিকতর বিনিয়োগ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একই ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ(বেজা) ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(এনএসডিএ)। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত চুক্তি করেছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিডা, বেজা ও এনএসডি বিনিয়োগসংক্রান্ত কাজ করে থাকে। তাই এই তিনটি প্রতিষ্ঠান একই ভবনে হওয়ায় পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে উন্নত বিনিয়োগ সেবার মাধ্যমে সরকারী ভিশন ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সহজ হবে, যার মাধ্যমে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
×