ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উৎসবে প্রজন্মের পছন্দ

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ৩ মে ২০২১

উৎসবে প্রজন্মের পছন্দ

লাল সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে আগমন ঘটে নতুন একটি দিনের। দিন যত যাচ্ছে পরিবেশ ততই প্রগাঢ়ভাবে বদলাচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে দিনের হাওয়া আর আমাদের সাজসজ্জা। আর এই ধাপে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের জুড়ি নেই। নিত্যদিন তারা নতুন নতুন সাজে সেজে উঠছে, সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। ফ্যাশনের আলোকে নিজেদের মেলে ধরতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে সাজতে ভীষণ ব্যস্ত তারা। চলছে গ্রীষ্মকাল। রোদের প্রচন্ড তাপপ্রবাহে মানবজীবন অতিষ্ঠপ্রায়। গ্রীষ্মের এই দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই এই গরমে জীবনযাত্রায় কিছুটা ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়। সেখানে পরিবর্তন আনা অত্যাবশ্যক। অন্যান্য ঋতুর তুলনায় গরমকালে পোশাক-পরিচ্ছদে যদি স্বাচ্ছন্দ্য না আনা যায়, তবে অস্বস্তির কোন সীমা থাকে না। তাই শরীরের সঙ্গে মানিয়ে শরীরের তাপমাত্রাকে সহনীয় রাখতে পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে হবে। এ সময়টা অন্যান্য ঋতুর তুলনায় অনেক বেশি উষ্ণ। উষ্ণ আবহাওয়ায় দৈনন্দিন চলাফেরার পাশাপাশি বাড়তি নজর দিতে হয় পোশাকের দিকে। সচেতন না হলে সূর্যের তেজ যেন এক হাত দেখিয়ে দেয় আমাদের। গরমে পরে আরাম, শরীরের তাপকে শোষণ করতে পারে, এমন হাল্কা রঙের পোশাক পরাই শ্রেয়। সেখানে প্রথম পছন্দ হতে পারে সুতি কাপড়। সুতি কাপড় শরীরের তাপ ও বাইরের তাপমাত্রা, দুটোই প্রতিরোধের যোগ্য। তরুণ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় পোশাক হলো টি-শার্ট। তরুণদের ফ্যাশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণও এই টি-শার্ট। মূলত পাশ্চাত্য পোশাক হলেও সারা পৃথিবীর তরুণদের কাছে টি-শার্ট একইভাবে জনপ্রিয় ও সমাদৃত। টি-শার্ট কেবল আর পোশাক বা ফ্যাশনের উপাদান নেই। বরং হয়ে উঠেছে ক্যানভাস। ফলে নানা ধরনের বক্তব্য মুদ্রিত টি-শার্ট সারা বিশ্বেরই বেশ জনপ্রিয়। এই গরমে ফ্যাশন হাউসগুলো রুচিও আরামের ওপর বিচার করে পোশাক তৈরি করছে। একটু ইজি ও স্মার্ট পোশাক না হলে আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা মুশকিল। এই গরমে হাতা কাটা পোশাকগুলো বেশ পছন্দ করছে বর্তমান ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণী। এর পাশাপাশি রকমারি রং ও ডিজাইনের আরামদায়ক টি-শার্ট। পোশাকটি আমাদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে এনেছে নতুন মাত্রা। ফ্যাশন ভাবনা বজায় রেখে তরুণ প্রজন্ম ঝুঁকছে পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকেও। গরম থেকে প্রশান্তি, সহজে বহনযোগ্য আর ফ্যাশনে আধুনিকতার ছোঁয়া-সব মিলিয়ে পশ্চিমা পোশাকগুলো বর্তমান তরুণ প্রজন্মের বেশ পছন্দের। সঠিক পোশাক নির্বাচন বয়সটা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। বর্তমান তরুণ সমাজ এখন অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন। ইংরেজী ও অন্যান্য ভাষায় নানা কিছু লেখা টি-শার্ট আছে। বাংলাদেশেও এটা অনুসৃত হচ্ছে। এ ধারায় অবশ্য উল্লেখ্য. নিত্য উপহারের নাম। বাংলাদেশে টি-শার্টকে ক্যানভাসে পরিণত করার কৃতিত্ব তারা দাবি করতেই পারে। এরপর দেশালও একই পথে চলে। তবে এ ধারায় টি-শার্টকে অন্যভাবে ফুটিয়ে তোলার কৃতিত্ব অবশ্যই বাংলার গঞ্জির। এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়ারুজ্জামান। আর্ট ও গ্রাফিকস নিয়ে কাজ করার সুবাদেই টি-শার্ট নিয়ে মানুষের ভাবনাকে বদলে দেয়ার তাড়নাকে কাজে লাগান তিনি। নতুনভাবে তিনি শুরু করেন টি-শার্ট নকশা ও বিপণন। বাংলায় টি-শার্ট তরুণদের মনে স্থান করে দেয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল টি-শার্টের আধুনিকায়ন। প্রয়োজন ছিল টি-শার্টে এমন ভাষার প্রয়োগ, যার সঙ্গে তরুণ প্রজন্ম একাত্ম বোধ করতে পারে। আর তার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় নতুন প্রজন্মের এক্সপ্রেশন। আর ঠিক সেই কাজটাই করে ফেলেন ইয়ারুজ্জামান। তিনি টি-শার্টে নিয়ে আসেন এমন কিছু, যা প্রকাশ করে বাঙালীর নিজস্বতা, উপস্থাপন করে আমাদের সংস্কৃতি। যাপিত জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ইতিহাস, ঐতিহ্য, রসবোধ, প্রতিবাদ, সচেতনতাসহ আরও নানা বিষয় জায়গা করে নেয় তাদের টি-শার্টে।
×