ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার বিএনপি দমনে মরিয়া- ফখরুল

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ৮ এপ্রিল ২০২১

সরকার বিএনপি দমনে মরিয়া- ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার মহামারি করোনা মোকাবেলা নয় রাজনৈতিকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, ফরিদপুরের সালথায় বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে মামলা ও গ্রেফতার করে হয়রানী-নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ছাড়া অবিলম্বে তাদের নামে করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিয়ে সালথা এলাকায় স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি। ফখরুল বলেন, সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতায় দেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দেশে গত বছরের তুলনায় করোনা ভাইরাস মহামারী এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সঙ্কটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে আগের বছরের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার। ফখরুল বলেন, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোন চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন জারি করেছে। সরকারঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোন সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বড় বড় মার্কেট বা শপিং মল ছাড়া সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্তহচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নি¤œ আয়ের মানুষ। এর ফলে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে সরকার লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ণ চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই তাদের। ১২ বছরের অধিককাল ক্ষমতায় থাকা সরকারকে জনগণের নিকট জবাবদিহি করতেই হবে। ফখরুল বলেন, ফরিদপুরের সালথায় ৫ এপ্রিল করোনা মোকাবেলায় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারীরা একজন দোকান কর্মচারীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে স্থানীয় জনসাধারন ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জনসাধারণের বিক্ষোভ দমন করতে আইন শৃংখলা বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও একজনকে হত্যার পর উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে উল্টো বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার সাধারণ মানুষকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলা প্রমাণ করে সরকার মহামারী করোনা মোকাবেলা নয়, বরং মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফরিদপুরের সালথায় চার হাজার জনকে অজ্ঞাত রেখে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাম উল্লেখ করা ৮৮ জনের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। বর্তমানে সালথায় পুলিশী গ্রেফতারি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশুণ্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভিষিকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। মির্জা ফখরুল বলেন, গ্রেফতারের নামে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানী ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সালথার ঘটনার সাথে বিএনপি কোনভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণাদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে ফরিদপুরের সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উস্কানি ছিল। অপর এক বিবৃতিতে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ সালথার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে বেনামে থাকা আরও চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং ইতোমধ্যে ২১ জনকে গ্রেফফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি অবিলম্বে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন।
×