ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাইড শেয়ারিংয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ৮ এপ্রিল ২০২১

রাইড শেয়ারিংয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লকডাউনের মধ্যে শহরগুলোতে গণপরিবহন চালুর পর রাইড শেয়ারিংয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে মোটরবাইক চালকরা। তারা দ্রুত এই সেবা চালু করতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। বুধবার রাজধানীর মগবাজার, শান্তিনগর, মিরপুর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, বিমানবন্দর এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এতে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর মগবাজার মোড়ে বিক্ষোভ শুরু করে রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরসাইকেল চালকরা। এ সময় তারা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করে। এতে যান চলাচলে বিঘিœত হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডায়ও হয়। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে সাতরাস্তা মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয় রাইডাররা। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর পুলিশ আবার ধাওয়া দিলে তারা লাভ রোডের দিকে সরে যায়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাইডাররা রাজধানীর বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ করলেও বেশিক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে রাখতে পারেনি। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায়ও জড়াতে দেখা যায় তাদের। এদিকে সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ র‌্যালি নিয়ে শান্তিনগরে এসে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে পুলিশ তাদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় এয়ারপোর্ট রোড, বাংলামোটর রোড, কাকরাইল রোড ও মৌচাক রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষোভরত মোটরসাইকেল চালকরা জানান, মোটরসাইকেলে দু’জন চলতে তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বন্ধু পরিচয় দিলে আবার ছেড়েও দিচ্ছে; এমন ঘটনাও ঘটছে বলে জানান কয়েকজন রাইডার। আমান উল্লাহ নামে এক রাইডার জানান, একজনকে নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার সময় পথে পুলিশ তাকে আটকায়। বন্ধু পরিচয়ের পাশাপাশি অনেক অনুনয় অনুরোধ করার পর পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি জানান, তাদের সহকর্মীদের মধ্যে একজনকে মিরপুরে আটকায় পুলিশ। সেখানে মামলা দিলে অন্যান্য সহকর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা জানান, সরকারকে দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করতে হবে। আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমাদের একমাত্র আয়ের উৎস রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। সেটি বন্ধ করে দেয়ায় আমরা এখন বেকার। রাস্তায় যাত্রী নিয়ে বের হলে পুলিশ মামলা দেয়। দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু এবং অহেতুক মামলা বন্ধ করতে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি। তারা বলেন, চুক্তিতে রাইড শেয়ার করলে পুলিশ মোটরসাইকেল ধরে দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত মামলা দিচ্ছে। আমরা তো এই দেশেরই নাগরিক, আমাদের সঙ্গে এ কেমন বৈষম্য। ঋণ করে আমার মোটরসাইকেলটি কিনতে হয়েছে। প্রতি মাসে কিস্তি দিতে হয়। তিনদিন ধরে রাইড শেয়ার করতে পারছি না। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি। লকডাউনে আমাদের যে দুরবস্থা। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই। অপরদিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরসহ কয়েকটি রাস্তায় বিক্ষোভ করে রাইড শেয়ার মোটরসাইকেল চালকরা। এ সময় সেখান রাস্তায় যান চলাচলে কিছুটা বিঘিœত হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান জানান, তারা বেশ কিছু দাবি দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তাদের দাবি আমরা শুনেছি। তবে তারা বেশিক্ষণ সড়কে অবস্থান করেননি। আধাঘণ্টা থেকে চলে গেছেন। করোনানাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এক সপ্তাহের লকডাউন জারির পর রাইড শেয়ারিংয়েও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। তবে মানুষের দুর্ভোগ এড়াতে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে গণপরিবহন চালুর ওপর নিষেধাজ্ঞা বুধবার তুলে নেয়া হয়। এ ব্যাপারে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক নাসির উদ্দীন জানান, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ র‌্যালি নিয়ে শান্তিনগরে এসে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া রাজধানীর পান্থপথেও মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ করতে করতে মগবাজার এলাকায় গিয়ে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলিত হন। এদিকে বেলা ১১টায় খিলক্ষেত থানার এয়ারপোর্ট সড়কে বিক্ষোভ করেছেন মোটরসাইকেল চালকরা। খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ সজল বলেন, বিভিন্ন দাবি নিয়ে মোটরসাইকেল চালকরা সকাল ১১টার দিকে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। পরে ঘটনাস্থলে আমাদের টিম গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
×