ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শুভ অশুভ দ্বন্দ্ব

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

শুভ অশুভ দ্বন্দ্ব

দিন পাল্টেছে। এখন আর আগের মতো কোন সন্তানের তাদের বাবা-মা কাজে গেলে ফিরতে দেরি হলে গাল বেয়ে জল পড়ে না! ছোট্ট একটা যন্ত্র দিয়ে নিমিষেই খবর নেয়া যায়। সেই ভাল কাজের যন্ত্র এখন অবসর সময়ের খোঁরাকও জোগায়। কালের পরিবর্তনে এসেছে বিনোদনের নানা মাধ্যম। এখন মুহূর্তেই জানানো যায় নিজের আবেগ-অনুভূতি। সেই আবেগ-অনুভূতি জানাতে গিয়েই অপসংস্কৃতির পাল্লায় পড়ছে অনেকে। হচ্ছে না দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা। ফলস্বরূপ আমরা ক্রমশ হারাচ্ছি আমাদের সংস্কৃতি। সেসব অপসংস্কৃতির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নানা রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। যেমন, টিকটক ভিডিও করার জন্য ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রুপ স্টাডির নামে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ আবার কখনও কখনও চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে ভিডিও করার জন্য কাটাপড়া। অন্যদিকে ফেসবুক নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়ে কেউ কেউ বিনোদন পাচ্ছে। যেমনটা আমরা বিগত দিনে দেখেছি পদ্মা সেতুর জন্য মাথা লাগবে জাতীয় নানা রকম অপকর্ম। তা ছাড়া গুজব রটিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো তো আছেই। এক কথায় ভাল কিছু বিনোদন মাধ্যমকে নেতিবাচকভাবে নিয়ে তা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে যারা নানা চাকরি-বাকরি করেন তারা কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে নিজে নিজের মতো করে স্মার্টফোন নিয়ে বসে থাকেন ফলে তাদের ছেলেমেয়েরা তেমনই একটি শিক্ষা নিচ্ছে আবার সম্পর্ক বিচ্ছেদসহ নানা ঘটনা ঘটছে। পত্রিকার পাতা উল্টালে বোঝা যায় এটা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সে ঘটনা বন্ধ করে আবারও দেশীয় সংস্কৃতি চালু করতে হলে অপ্রয়োজনীয় মাধ্যমগুলা বন্ধ করে দেয়া। দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বাড়ানো ও বেগবান করা। অচিরেই দেশের মানুষ বিনোদনের কেমন সুবিধা পাবে সেজন্য একটা নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। সেসব মাধ্যমই দেশে চলবে যেসব দেশীয় সংস্কৃতিমনা। এমন বিনোদন মাধ্যম চলবে না যেখানে মানুষের মনকে শুভ দিকে না নিয়ে অশুভ দিকে নিচ্ছে সেগুলা। সেইসঙ্গে দেশব্যাপী সংস্কৃতি চর্চার প্রচারণা চালানো যে কারণে মানুষ সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী থাকে। কে কী ব্রাউজিং করছে তার তদারকি বাড়ানো চাই। শুধু তাই নয়, একজন শিক্ষার্থী যাতে পড়ালেখার সর্বোচ্চ সুবিধা পায় সেজন্য শিক্ষণীয় বাতায়ন তৈরি ও অভিভাবকদের নিজের সন্তানের প্রতি সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। এভাবেই অপসংস্কৃতি রোধ করা সম্ভব। এছাড়া ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ এর আরও সুপ্রয়োগ চাই। এতে কেউ অপসংস্কৃতি কিংবা গুজব রটাতে সাহস পাবে না। দিন শেষে আমরা যদি সংস্কৃতি এবং মানুষের প্রতি সচেতন থাকি তাহলেই এসব থেকে মুক্ত হতে পারব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×