ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আঁরা এড়ে গম আছি ন আইলে ন বুঝিবা আনন্দে কাটছে দিন কূটনীতিকদের ভাসানচর পরিদর্শন করানোর পরিকল্পনা

তোঁয়ারা এড়ে আই য গৈ ॥ স্বজনদের প্রতি ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: ২২:৫০, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

তোঁয়ারা এড়ে আই য গৈ ॥ স্বজনদের প্রতি ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গারা

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম/ হাসান নাসির, ভাসানচর থেকে ॥ ‘চল চল ভাসানচর চল’ শিরোনামে ব্যানার লাগিয়ে বাসযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং এরপরে চট্টগ্রাম থেকে জাহাজযোগে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর গেল রোহিঙ্গাদের ১৬৪২ সদস্যের প্রথম দল। ভাসানচরে শুক্রবার রাত কাটানোর পর শনিবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের দেখা গেছে প্রাণবন্ত। সেখানে তারা মোবাইল ফোন যোগে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত অবস্থায় আত্মীয়স্বজনদের উদ্দেশ করে এখন বলতে শুরু করেছে ‘এড়ে আই য-গৈ’, ‘তোঁয়ারা এড়ে আই য-গৈ’ (এখানে চলে আস, তোমরা এখানে চলে আস)। আঁরা এড়ে গমআছি (আমরা এখানে ভাল আছি)। এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দুই দিনে প্রথম দফায় উখিয়া থেকে ১৬৪২ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সফলভাবে স্থানান্তরের বিষয়টি বিভিন্ন মহলে ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতিসংঘ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানানো হয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়া এইচআরডব্লিউ (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) ও এআই (এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল) স্থানান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার আহ্বান জানানোর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার পর্যন্ত কোন বক্তব্য দেয়নি। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সুফল সরেজমিনে দেখার জন্য ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও দাতা এবং মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের নেয়ার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভাসানচরে যে ১৬৪২ রোহিঙ্গা উখিয়া থেকে স্থানান্তর হয়েছে তাদের অধিকাংশের মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। কোথায় উখিয়া-টেকনাফের ঘিঞ্জি আশ্রয় শিবির, আর কোথায় ভাসানচরের দালান কোঠায় সুন্দর পরিবেশে থাকা। এদের অনেকের পক্ষ থেকে আওয়াজ উঠেছে ‘এড়ে আই য-গৈ’ অর্থাৎ এখানে চলে আস। ‘এড়ে নআইলে নবুঝিবা’ অর্থাৎ এখানে না আসলে বুঝবা না। শুক্রবার ভাসানচরে পৌঁছে যার যার জন্য বরাদ্দকৃত ভবনে রাত কাটানোর পর শনিবার সকাল থেকে মোবাইল ফোনযোগে উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত আত্মীয়স্বজনদের উদ্দেশ করে এ জাতীয় নানাকথা নিয়ে তৎপর রয়েছে রোহিঙ্গারা। শুধু আসার আহ্বান নয়, ভাসানচরের অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশ নিয়ে আরও নানা কথা। অপরদিকে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দলটি কখন ভাসানচরে নেয়া হচ্ছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে প্রক্রিয়া চলছে। এবার এত বড় দলের বদলে ক্ষুদ্র ক্ষদ্র অংশে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। এবং এ কাজের দায়িত্ব বিভিন্ন এনজিওকে দেয়া হতে পারে। ভাসানচরে এখন ২২টি এনজিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি হাসপাতাল ও ২টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। সরকারী একটি মেডিক্যাল টিম ভাসানচরে সার্বক্ষণিক অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার সুফল সরেজমিনে দেখানোর জন্য ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সাহায্য সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভাসানচরের আগেই দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ করে রাখা হয়েছে। ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী শনিবার জানিয়েছেন, নৌবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু আরআরসি এবং ২২ এনজিওর সমন্বিত প্রয়াস না থাকলে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর সম্ভব হতো না। রোহিঙ্গাদের প্রথম ধাপে স্থানান্তর প্রক্রিয়াকে সরকারের জন্য ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে বিভিন্ন মহলে আলোচনায় এসেছে। এ কাজটি অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কেননা, একে তো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ছিল সার্বক্ষণিক। অপরদিকে জাতিসংঘ ছিল নাখোশ। তারা বলে দিয়েছে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় তাদের যুক্ত করা হয়নি। এছাড়া এইচআরডব্লিউ ও এআই সরাসরিভাবে স্থানান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু এই বাধার দেয়াল ডিঙ্গিয়ে আগ্রহী রোহিঙ্গারা গেছে ভাসানচরে। র‌্যাব, নৌবাহিনী, পুলিশ ও বিভিন্ন এনজিওর সংস্থার পক্ষে তাদের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে। এখন ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মুখে বেরিয়ে আসছে উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় ক্যাম্পে যারা রয়েছে তারা যেন অবিলম্বে চলে আসে। কেননা ভাসানচরে সরকার ৩১শ’ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয়ে যে প্রকল্প গড়ে তুলেছে তা ছিল মূলত বাড়ি-ঘরহীনদের জন্য। এটি সম্পন্ন হওয়ার আগেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলে এসেছে। উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ভারে জর্জরিত হয়ে আছে। স্থানীয়রা কেবলই ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করছে। পরিবেশের বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই অবস্থায় সরকার এ প্রকল্পকে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ীভাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে নির্বিঘ্নে। প্রথম দফায় ১৬৪২ রোহিঙ্গা যাওয়ার পর এখন কয়েক লাইনে রয়েছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। এদের সহসা উখিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হবে। এর পরে ধাপে ধাপে নেয়া তাদের ভাসানচরে। এটাই এ কাজে সংশ্লিষ্টদের চিন্তা ভাবনা। ভাসানচরের নবজীবনে রোহিঙ্গাদের নতুন সকাল ॥ ভাসানচরে শনিবার দিনটি ছিল অন্য রকমের। আর দশটি দিনের চেয়ে আলাদা। কেটে গেছে সেই নির্জনতা। দ্বীপটিতে এদিন ছিল ১৬৪২ রোহিঙ্গার নতুন সকাল। আগেরদিন শুক্রবার জাহাজযোগে তাদের আনা হয়েছে। নির্মল পরিবেশে গড়ে ওঠা ঘরে তাদের কেটেছে প্রথম রাত। রাতে গভীর নিদ্রাযাপনে কেটে গেছে ক্লান্তি। অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে প্রায় অভিন্ন সুর- ‘বঅর বেশি ভালা লাইগ্গে।’ অর্থাৎ অনেক বেশি ভাল লেগেছে। নান্দনিক স্থাপনায় সাজানো ভাসানচরের নীরবতা ভেঙ্গেছে। এত সুন্দর করে বানানো এতগুলো ঘর। কিন্তু ছিল না থাকবার মানুষ। প্রথম দফায় ১৬৪২ রোহিঙ্গা যখন দ্বীপে পা রাখে তখন শুক্রবার বিকেল গড়িয়ে যায়। কৌতূহল ছিল, রাতটা কেমন কেটেছে তা জানবার। শনিবার সকালেই ছুটে যাই লাল ছাউনিযুক্ত বাড়িগুলোতে। প্রথমেই প্রাণ জুড়িয়ে দেয় কোমলমতি শিশুদের ছোটাছুটি। সামনের লম্বা বারান্দা, সুপরিসর সড়ক আর সবুজ ঘাসযুক্ত আঙিনা পেয়ে খেলায় মেতেছে শিশুরা। সন্তানদের খেলাধুলা দেখে চোখে মুখে আনন্দের ছাপ রোহিঙ্গা বাবা মায়ের। এমন হবে তা ভেবেছিল কি তারা? সকালে বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলেন আমির হোসেন। তিনি এসেছে স্ত্রী এবং ছয় সন্তানসহ। রাতে কেমন লেগেছে জানতে চাইলে বললেন, ‘ভালা লাইগ্গে’ অর্থাৎ ভাল লেগেছে। ‘চর হনে হয়, ইয়ানতো শঅর।’ অর্থাৎ চর কে বলে, এটা তো শহর হয়ে গেছে। মিনারা এসেছেন এক শিশু সন্তান নিয়ে। তার বয়স আনুমানিক ২২। তবে স্বামী আসেনি। স্বামী ছাড়া কেন, এ প্রশ্নের জবাবে যা জানালেন, তাতে মনে হলো, সংসারে কিছু ঝামেলা আছে। বললেন, সে ইচ্ছে হলে আসবে, না হলে না আসবে। এখানে থাকার ভাল ব্যবস্থা আছে জেনে চলে এসেছি। খুইল্লা মিয়া এসেছেন স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে। তার বয়স ৬০ বছরের মতো। জানালেন, এত ভাল লাগবে তা ভাবেননি। যতদিন বাংলাদেশে থাকতে হয়, এখানেই থেকে যাবার ইচ্ছে তার। মোহাম্মদ আমিন (২৭) নামের আরেক রোহিঙ্গা এসেছেন স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে। ছেলেমেয়েরা খোলামেলা পরিবেশে খেলছে তা কুতুপালং ক্যাম্পে কল্পনাও করতে পারেননি, জানালেন তিনি। ভাসানচরে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বে রয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিভাগ। কাজ করছে ২২টি বেসরকারী সংস্থা (এনজিও)। তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো শনিবার সকালে বৈঠক শেষে তাদের প্রস্তুতির সার্বিক দিক অবহিত করেন সাংবাদিকদের কাছে। তারা জানান, রোহিঙ্গাদের লাগেজ এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথমে কয়েকদিন তাদের রান্না করা খাবার বিতরণ করা হবে। এরপর তারা নিজেরাই রান্না করে খাবে। শনিবারের মধ্যে তাদের এক মাসের রেশন ও রান্নার চুলা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী শনিবার জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সৈনিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়েছে। রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় আরআরআরসি ও ২২ এনজিওর সমন্বিত প্রয়াস না থাকলে এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হতো না। তিনি জানান, একটা লম্বা জার্নির পর প্রথমে তাদের স্বাস্থ্য সহযোগিতার বিষয়টি আগে দেখা হচ্ছে। আমাদের দুটি ২০ শয্যার হাসপাতাল এবং চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী আছে। সে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি হাসপাতাল ও ২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কাজ শুরু হয়েছে। ভাসানচরে নিয়োজিত বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পালস-এর নির্বাহী প্রধান সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম বলেন, আমরা এক বছরের সহায়তা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। যে পরিমাণ খাদ্য ও মেডিক্যাল সহায়তা প্রয়োজন, তার সবই আনা হয়েছে। রোহিঙ্গারা সুযোগ সুবিধার কথা জানিয়ে কক্সবাজার ক্যাম্পের পরিচিতদের টেলিফোনে বলছে ভাসানচরে চলে আসতে। আমরা আশা করছি আরও রোহিঙ্গা আসবে। এএসএইচ ফাউন্ডেশন নামে আরেক এনজিও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, বড় এনজিওগুলো না এলেও আমরা ২২টি ছোট এনজিও এক হয়েছি। কারণ আমাদের কাছে দেশের মর্যাদা আগে। রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুত হয়ে আমাদের দেশে এসেছে। তাদের কোথায় রাখব, তা আমাদের ব্যাপার। সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা বলেন, ভাসানচরে যারা আসবে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে আমাদের কোন সমস্যা হবে না। কারণ আমরা নতুন কিছু করছি না। কক্সবাজারে যে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলাম, তা শিফট করেছি মাত্র। এখানে বরং আমাদের খরচ কম হবে। কারণ রাস্তাঘাট, ভবনের অভাব নেই। অফিস ভাড়া লাগছে না। স্কুল করার জন্যও ভবন আছে। কুতুপালংয়ে এত সুবিধা নেই। শনিবার থেকে নতুন জীবন ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের। তারা এখন অনেকটা পরিকল্পিত এক শহরে। আলাপে তাদের বেশিভাগই জানান, থাকবার মানসিকতা নিয়েই তারা এসেছেন। স্বজনদেরও জানিয়ে দিয়েছেন সুযোগ সুবিধার কথা। আত্মীয় ও পরিচিতি অনেক পরিবার সাময়িক বসবাসের জন্য ভাসানচরে চলে আসবে, এমনই বলছে নতুন আশ্রয়ে আসা রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা স্থানান্তর পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ ॥ ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর পরিস্থিতি জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ করছে। ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে অংশগ্রহণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মিয়া সেপ্পো। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানোই সঠিক সমাধান। উল্লেখ্য, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পূর্বে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উখিয়া-টেকনাফ থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে জাতিসংঘ অবগত রয়েছে। স্থানান্তরের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে অথবা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এছাড়া স্থানান্তরের কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যও নেই। উল্লেখ করা যেতে পারে, পুরো ভাসানচরটি মোট ১৩ হাজার একর জমি নিয়ে গড়া। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৩১শ’ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে ৬ হাজার একর জমি। এর ৬ হাজার একর থেকে ১৭০২ একরের ওপর বর্তমান প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে ১ লাখ রোহিঙ্গা রাখা যাবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকা নতুন স্থাপনা গড়া হলে আরও ২ লাখ রোহিঙ্গাকে রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। তিনি আরও জানিয়েছেন, ৬ হাজার একরের বাইরের জমিতে জোয়ার-ভাটার পানি গড়িয়ে যায়। সেখানে কোন প্রকল্প নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেই।
×