ওরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটি উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা করে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে। অন্য কোন পথ ও ইস্যু না পেয়ে ধর্মীয় ইস্যু সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোন অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে। সোমবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত ২২তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও এদেশের আবহমানকালের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ। ওবায়দুল কাদের বলেন, শিল্প চর্চা মনের খোরাক জোগায়। শিল্প কখনও প্রেম, কখনও দ্রোহ, কখনও সবুজ কখনও লাল। রং তুলি হাতে এদেশের শিল্পীরা ’৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলেন। হানাদারদের নৃশংসতা তুলে এনেছিলেন ক্যানভাসে। দেশীয় সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশ, মুক্তমনের প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্কৃতির বৃত্ত ভাঙ্গার জন্যই শিল্পীরা যুদ্ধ করেছিলেন। অথচ আমরা এখন কী দেখছি? একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শিল্পকলার শক্তিশালী মাধ্যম ভাস্কর্যের বিরোধিতায় নেমেছে। মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। মূূর্তি বা প্রতিমা তৈরি হয় উপাসনার জন্য আর ভাস্কর্য সৌন্দর্যের অংশ। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন রাজনীতির কবি, বক্তৃতায়-বাগ্মিতায় তিনি অমর। এই বাংলার জনমানুষের জীবনদলের শিল্পী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ছিলেন বাঙালী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতির ভাঙ্গাসেতু মেরামত করে তৈরি করেছিলেন অটুট সেতুবন্ধ। তিনি বলেন, মুজিববর্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য এদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর চ্যালেঞ্জ। ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে কোন আলোচনা হতে পারে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিষয়ে কোন আপোস নেই। সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী কোন বক্তব্য বরদাশত করা হবে না। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মান্নান ইলিয়াস, চিত্রশিল্পী সহিদ কবির, শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম প্রমুখ। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।