ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিআরটিসির ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন শেষে কাদের

অপরাজনীতির জন্য বিএনপি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২৯ অক্টোবর ২০২০

অপরাজনীতির জন্য বিএনপি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নিজেদের অপরাজনীতির জন্যই দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন বিআরটিসির উদ্যোগে গাবতলী ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রীয় এই সেবা সংস্থা বিআরটিসিকে কিভাবে লাভবান করা সম্ভব সে পথও বাতলে দেন মন্ত্রী। বিএনপি নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকারের ওপর দোষ চাপাচ্ছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, সরকার বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়’, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বলেন, সরকার নয়, বিএনপি নিজেদের অপরাজনীতির জন্যই দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় লোক দেখাতে, তারা ভোটের দিন কেন্দ্রে আসে না। এতে বিএনপি ভোটারদের আস্থা হারিয়ে ফেলছে এবং আন্দোলনের ডাক দিয়ে নেতারা ঘরে বসে থাকার কারণে তাদের ওপর কর্মীরাও আস্থা হারিয়ে ফেলছে বলেও মনে করেন এই রাজনীতিক। সরকার বিরাজনীতিকরণে বিশ্বাসী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে বিরোধী দলগুলোর সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে সরকার। নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগেই তারা হেরে যায়। তাদের রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে ঠেকেছে। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দলের কী ভূমিকা তা জানতে আওয়ামী লীগের অতীত ভূমিকা দেখুন, তখন নিজেদের ব্যর্থতা চিহ্নিত করতে সহজ হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে নারী গাড়িচালকের চাহিদা দিন দিন বড়ছে, তাই বিআরটিসির নারী বাস সার্ভিস, স্কুলবাস সার্ভিসে শতভাগ নারী চালক ও সহকারীদের সম্পৃক্ত করা জরুরী। সেবার মান, দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ালে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে বিআরটিসিকে লাভজনক করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলছে বিআরটিসি। সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখলেও ফের হিসাবের খাতায় লস। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার ধাক্কায় ফের লসের ঘরে গেছে বিআরটিসির হিসাব। কিন্তু রাষ্ট্রীয় এই পরিবহন সেবা সংস্থাটিকে লাভের মুখ দেখাতে নতুন প্রায় চার শতাধিক যান বহরে যুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বাসের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু এত বাস নামানোর পরও বিআরটিসি নতুন নতুন রুটে গাড়ি পরিচালনা খুব কমই করতে পেরেছে। হাতেগোনা কয়েকটি রুটে বাস নামালেও বেসরকারী বাস মালিক সমিতির তীব্র আন্দোলনের মুখে নিজেদের গুটিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। অব্যাহত লসের মুখে কিছুদিন আগেও বিআরটিসির কর্মীরা বেতন না পেয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়। আবার চলমান রুটও বন্ধ হয়ে যাওয়ার নজির আছে। গত কয়েকটি অনুষ্ঠানে বিআরটিসিকে নিয়ে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। বারবার দুর্নীতি বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে লাভের মুখ দেখাতে সকলের পক্ষ থেকে আন্তরিক সহযোগিতাও কামনা করেছেন তিনি। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণও করেছেন। সব মিলিয়ে খুব যে সুফল মিলেছে তা বলা যাবে না। তাই বুধবারের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আবারও বলেন, সরকার বিআরটিসিকে একটি জনবান্ধব ও সেবাবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক চেষ্টায় বিআরটিসি অবশ্যই লাভের ধারায় ফিরবে বলে করি।
×