ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়ানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়ানোর উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত কয়েক বছরে ইলিশের বিপ্লব ঘটেছে। নানামুখী পদক্ষেপের কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদনও বেড়েছে। আর উৎপাদন ভাল থাকার কারণে সাধ্যের মধ্যে সবাই খেতে পারছে সুস্বাদু ইলিশ। ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। দেশের ২৯ জেলার ১৩৪ উপজেলায় ইলিশ নিয়ে কাজ করতে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। জানা গেছে, মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ এবং জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করেছে। এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মৎস্য অধিদফতর। একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামীকালের একনেক সভায় ইলিশের প্রকল্পটিসহ মোট ছয় প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। গণভবন থেকে সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ইলিশের উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমিষের চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়বে ও উপকূলীয় জেলেদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য সৃষ্টি করা হবে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ। জেলেদের ১০ হাজার বৈধ জাল বিতরণ ও প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সুরক্ষা দেয়া হবে। নিম্ন মেঘনা নদী, তেঁতুলিয়া নদী, আন্ধারমানিক নদী, নিম্ন পদ্মা নদীতে নির্দিষ্ট সময়ে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ করা হবে। ইলিশ মাছ বাংলাদেশের প্রায় সব প্রধান নদ-নদী, মোহনা এবং উপকূলে ডিম ছাড়ে। তবে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ইলিশের চারটি প্রজনন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোতে পাহারা দেয়া হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে জেলে প্রতি ২৫ হাজার টাকা নগদ প্রদানের পরিবর্তে স্থানীয় চাহিদার জন্য সমপরিমাণ টাকার উপকরণ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে ও প্রশিক্ষণার্থীদের মোবাইল নম্বরসহ ডাটাবেজ সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে উপকরণের বিবরণ ও পরিমাণ, উপকরণভিত্তিক প্রশিক্ষণের ট্রেড নির্ধারণ, প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল, প্রশিক্ষণ ক্যারিকুলাম, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদির তথ্যাদি ডিপিপিতে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া অবৈধ কারেন্ট জাল ধ্বংস করে জেলেদের মৎস্যবান্ধব জাল দেয়ার ক্ষেত্রে বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জালের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া জালের নাম ব্যাস, সুতার মান সুনির্দিষ্টভাবে ডিপিপিতে উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় পোস্টারের ছাপানো বাজার দর যাচাই করে যৌক্তিক করতে হবে। নোটবুক প্রস্তত করা ডিপিপি থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া প্রাক্কলিত বিলবোর্ড স্থাপন, জেলেদের আইডি কার্ড হালনাগাদকরণ আইটেমটি বাদ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
×