ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেলের উন্নয়ন

প্রকাশিত: ২১:০১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

রেলের উন্নয়ন

গণপরিবহন হিসেবে রেলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ যাত্রা হিসেবে রেলের যে দীর্ঘদিনের অর্জন, তাও এই ব্যবস্থাপনার একটি স্বাভাবিক চিত্র। বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী অঙ্গীকারে পরিবহনের এই খাতকে নতুন মাত্রা দিতে বিভিন্ন কর্ম নির্দেশনাও দিয়েছে। সারাদেশের রেল যোগাযোগকে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে গড়ে তুলতে অনেক কর্ম পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। রেল লাইনের আধুনিক সংস্করণ থেকে শুরু করে যাত্রী উপযোগী নিরাপদ প্ল্যাটফরম তৈরি রেল ব্যবস্থাপনায় নতুন সংযোগ। তবে যাত্রী সেবার নিরাপদ মাধ্যমটি বিভিন্ন সময়ে হরেক রকম ত্রুটি-বিচ্যুতিরও শিকার হয়েছে। মারাত্মক রেল দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে সেবার মান নিয়েও বিভিন্ন সময় ওজর আপত্তি ওঠার কারণও দৃশ্যমান হয়েছে। রেল সংযোগের বিভিন্ন স্থাপনায় যে অব্যবস্থাপনার চিত্র সেটাও পরিবহনের এই সূচকে নানা মাত্রিক অসঙ্গতির কারণ হয়েছে। তারপরেও নিরাপদ বিবেচনায় রেলভ্রমণ যাত্রীদের স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দেয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এক সচেতন দায়বব্ধতা। বহুল প্রশংসিত ও আলোচিত রেলকে আরও নতুন কর্মযোগে মহাপরিকল্পনায় সাজানো-গোছানোর অবিরাম প্রচেষ্টাও চলছে। বিশ বছরের মহাপরিকল্পনায় আড়াই লাখ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে আধুনিক প্রযুুক্তি ও কর্মযোগে রেলকে আরও উন্নত মাত্রা দিতে। করোনা দুর্যোগ উন্নয়নের অন্যান্য সূচকে যে স্থবিরতা নেমে আসে সেখানে নিরাপদ যাতায়াতের এই প্রয়োজনীয় খাতটিও পড়ে চরম বিপাকে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে গিয়ে করোনার চরম দুঃসময়ে রেলের ওপরও পড়ে এক অনিবার্য রুদ্ধতার শৃঙ্খল। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে স্বস্তির প্রয়াস মিললে তা আবার নতুন গতি ফিরে পায়। এখানেও অন্যান্য গণপরিবহনের চাইতে নিরাপত্তার বিধানটি বেশ জোরালো। স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রাসঙ্গিক নিয়মগুলো যথাযথ পালন করার তথ্যও মিলেছে সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের কাছ থেকে। নেটওয়ার্কের এই নতুন কর্মযোগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি চট্টগ্রামের দোহাজারি-কক্সবাজার ও ঘুমধুম রেল ব্যবস্থাপনায়। বিদেশী ঋণ ছাড়াই নিজেদের অর্থায়নে তৈরি পদ্মা সেতুও তার সঙ্গে সংযুক্ত রেললাইন প্রতিস্থাপন বর্তমান সরকারের এক অবিস্মরণীয় কর্মযজ্ঞ। তেমন মেগা প্রকল্প চলমানের মধ্যেই নতুন করে বিশ বছরের আরও এর মহাপরিকল্পনা নেয়া নেটওয়ার্কের ভিত্তিতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আড়াই লাখ কোটি টাকার বিশাল অর্থায়নে এই সুদূরপ্রসারী কর্মযোগকে বাস্তবে রূপ দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বক্ষণিক নজরদারিতে এই মেগা প্রকল্পকে তার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দিতে সব ধরনের কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যুগান্তকারী এমনসব কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন হলে দেশের সিংহভাগ রেল ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসতে সময় নেবে না। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি তার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। উন্নয়নের মহাপরিকল্পনায় বাংলাদেশের এই অগ্রগতি দেশ ও জাতির আগামীর ভবিষ্যতকে সমৃদ্ধির পথ দেখাবে নিঃসন্দেহে।
×