ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু

প্রকাশিত: ০০:২৮, ২৭ আগস্ট ২০২০

পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলো। বুধবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট থেকে কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে। বিদ্যুত কেন্দ্রটি দেশের সব থেকে বড় বিদ্যুত কেন্দ্র। সরকারের মেগা বিদ্যুত প্রকল্পের মধ্যে পায়রাই প্রথম উৎপাদনে এসেছে। চীন এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ মালিকানায় কেন্দ্রটি পটুয়াখালীর পায়রাবন্দর এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। সরকার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এজন্য বন্ধু দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে যৌথ অংশীদারিত্ব দেয়া হয়। পায়রা কেন্দ্রটিও তেমন। এর মধ্য দিয়ে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে দেশে দক্ষ জনবল যেমন গড়ে উঠবে তেমনই আবার দেশের অংশীদারিত্বও বজায় থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বহুমুখী জ্বালানি ব্যবহার নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এজন্য কয়লা, এলএনজি এবং পরমাণু ব্যবহারে বিদ্যুত উৎপাদন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আওতায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দেশের মেগাপ্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। রাতে কেন্দ্রটির প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা বিকেলে কেন্দ্রটি চালু করেছি। এখন ১০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। উৎপাদন ধীরে ধীরে ৬৬০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। এক মাস এভাবে টেস্ট রানে চালানোর পর আমরা বাণিজ্যিক উৎপাদনের ঘোষণা দেব। গত ১৩ জানুয়ারি বিদ্যুত কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু করে। আর ১৪ মে বাণিজ্যিক উৎপাদনের ঘোষণা দেয়া হয়। এখন কেন্দ্রটি এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতই উৎপাদন করতে পারবে। তবে উৎপাদন ক্ষমতা থাকার পরও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ঢাকা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে না পারায় আপাতত কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালানো সম্ভব হবে না। পায়রা প্রতিদিন এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারবে। কিন্তু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুতের এতটা চাহিদা নেই। এজন্য এই কেন্দ্রের বিদ্যুত ঢাকায় আনার জন্য গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। কিন্তু পিজিসিবি ওই প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি। আগামী বছরের শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) সূত্র বলছে, আপাতত দুটি ইউনিটই অর্ধেক লোডে চালানো হবে। পটুয়াখালী, বরগুনা এবং বরিশাল এলাকায় কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুত সরবরাহের জন্য একটি সাবস্টেশনও নির্মাণ করেছে বিসিপিসিএল। রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট এ্যান্ড ইমপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) সমান অংশীদারিত্বে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। এর মালিকানার অর্ধেক রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে বাকি অর্ধেক চীন সরকারের হাতে। চীনের এক্সিম ব্যাংক কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করেছে।
×